প্রতীকী ছবি।
শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষ ঢুকছেন। ফলে বাড়ছে সংক্রমণের আশঙ্কা। এই অবস্থায় রাজ্যে পর্যাপ্ত কোয়রান্টিন সেন্টার নেই। যেগুলি আছে, তাদের থাকা-খাওয়ার মান নিয়ে অভিযোগ উঠছে। এ বার তাই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলিকে ওই কাজে এগিয়ে আসার মৌখিক প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফেই। তারা রাজি হলে লিখিত ভাবে জানাতে বলা হচ্ছে। তার ভিত্তিতে সরকারি নির্দেশিকা দেওয়া হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’দিন আগে জলপাইগুড়িতে অন্তত ১৯টি সংগঠনের ৫৬ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে বৈঠক করেন করোনা মোকাবিলায় উত্তরবঙ্গে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ আধিকারিক সুশান্ত রায়। বুধবার জিটিএ কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়েও বৈঠক করেন। সেখানে তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যদের প্রস্তাব দেন, তারা নিজেদের উদ্যোগে ১৫ দিন, এক বা দু’মাস করে কোয়রান্টিন সেন্টার চালানোর দায়িত্ব নিক। সেই প্রস্তাবে বলা হয়, ওই সংগঠনগুলি অনেক গরিব মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের খাবারদাবার জুগিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে আবার অপচয়ও হয়েছে। উল্টো দিকে, সরকার যে পরিযায়ীদের জন্য কোয়রান্টিন সেন্টার করছে, সেখানে অনেক ক্ষেত্রে কাজ সুষ্ঠুভাবে হচ্ছে না। আবার কোয়রান্টিন কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। এই অবস্থায় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি এগিয়ে এলে উপকার হয়। তাই তারা রাজি থাকলে লিখিত ভাবে জানান। সেই মতো সরকারিস্তরে কথা বলে তাঁরা যাতে সেই কাজ করতে পারেন, সেই নির্দেশিকা দেওয়া হবে।
দায়িত্বে থাকা ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘সরকারি ব্যবস্থায় কোয়রান্টিন কেন্দ্রগুলি বর্তমানে চলছে। তবে সেই সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। তা ছাড়া সরকারি সেন্টারগুলিতে দেখভাল, খাবারের ব্যবস্থা সব সময় ঠিক মতো হচ্ছে না। তাই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা রাজি হলে খুবই ভাল হবে।’’ দফতরের একটি সূত্রেই জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য দফতর বা প্রশাসনও পাশে থাকবে। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা যাবেন। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করবে স্বাস্থ্য দফতরই। তবে যাঁরা চাইবেন, তাঁদের দায়িত্ব নিয়ে কাজটি করতে হবে। যে ক’দিনের জন্য নিয়েছেন, তার মাঝ পথে যেন দায়িত্ব ছেড়ে চলে না যান, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির একাংশের জানিয়েছে, তারা বিষয়টি ভেবে দেখছেন। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে শীঘ্রই মত জানাবে। এ দিন শিলিগুড়িতে ১৭টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ২৬ জন সদস্যকে নিয়ে বৈঠক করে একই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। শীঘ্রই মালদহ, উত্তর দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে সেখানকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি একই প্রস্তাব দেওয়া হবে। কয়েকটি জায়গায় কোয়রান্টিন সেন্টারে পরিষেবার অভাবে অনেকেই পালিয়ে যাচ্ছেন। অনেক ক্ষেত্রে সেখানে থাকতে চাইছেন না ভিনরাজ্য ফেরত বাসিন্দারা। এই ব্যবস্থা চালু হলে সেই পরিস্থিতির বদল ঘটতে পারে।