প্রতীকী ছবি।
প্রস্তুতি ছিল পুরোদমে। আশা ছিল, রথের জোরে বাড়তে পারে সংগঠন। কিন্তু রথযাত্রা থমকে যাওয়ায় উদ্বেগে চা-বলয়ের বিজেপি নেতৃত্ব।
চা বলয়ে বিজেপির প্রস্তাবিত রথযাত্রা নিয়ে আয়োজনে কোনও ত্রুটি রাখতে চাননি নেতা-কর্মীরা। কারণ, রথযাত্রা হলে চা বাগান অধ্যুষিত কয়েকটি এলাকায় তা দাঁড় করিয়ে সভা করার কথাও রয়েছে। সেই সভাতে কোন নেতা থাকবেন, কর্মী-সমর্থকদের কোথা থেকে আনা হবে তাও হিসেব কষে রাখা হয়েছে। কিন্তু, রথযাত্রাই আপাতত থমকে যাওয়ায় সেই প্রস্তুতির কী হবে তা নিয়ে চিন্তিত চা বাগানের বিজেপি নেতারা।কারণ, এমনিতেই চা বাগানের সংগঠন তেমন জোরদার নয় বলে বিজেপির নেতারাই একান্তে মানেন। সেখানে প্রস্তুতির পরে ধাক্কা খাওয়ায় সংগঠন যতটা আছে ধরে রাখা যাবে কী ভাবে সেটা নিয়েই বিজেপির মধ্যে আলোচনা চলছে।
বিজেপি সূত্রের খবর, এখনও জলপাইগুড়ি জেলার অর্ধেক চা বাগানেই বিজেপির মণ্ডল কমিটি নেই। আলিপুরদুয়ারের চা বাগানগুলিতে তৃণমূল ছাড়া বাম ও কংগ্রেসের ঝান্ডা দেখা গেলেও বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের পতাকা দেখা যায় না। গত বিধানসভা নির্বাচনে মাদারিহাট আসনে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থী৷ কয়েক মাস আগে শেষ হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে মাদারিহাটে না পারলেও, জেলা পরিষদের একটি আসন ছাড়াও একটি পঞ্চায়েত সমিতি ও আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জয়ী হয় বিজেপি৷ এই সাফল্যের জন্য চা বলয় ও জনজাতি অধ্যুষিত এলাকার মানুষের সমর্থনকেই সবচেয়ে বেশি কৃতিত্ব দেন বিজেপি নেতারা৷ কিন্তু নির্বাচনে সফল হলেও বোর্ড গঠনের সময় দেখা যায় একটি পঞ্চায়েত সমিতি ছাড়াও বিজেপির বেশিরভাগ জেতা গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে ফেলে তৃণমূল৷ বিজেপির অনেক কর্মীরই দাবি, ওই এলাকাগুলিতে সংগঠন না থাকাতেই তৃণমূলকে টেক্কা দেওয়া তো দূরের কথা, লড়াইটুকু দেওয়া যায়নি বলে দাবি।
মাদারিহাটের তৃণমূল বিধায়ক মনোজ টিগ্গা বলেন, “যে বাগানে এখনও সংগঠন নেই সেখানেও তা তৈরির প্রক্রিয়া চলছে৷” এই পরিস্থিতিতে রথের সঙ্গে ছ’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তা দিয়েই চা বলয়ে সংগঠন বাড়ানোর স্বপ্ন দেখেছে গেরুয়া শিবির। কারণ, রথযাত্রা হলে তা আগামী ১০ ডিসেম্বর আলিপুরদুয়ার জেলায় পৌঁছবে বলে সূচিতে রয়েছে।
তৃণমূলের জলপাইগুড়ি যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় অবশ্য দাবি করেন, টাকা হাতে ধরিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে বিজেপি লোক টানার চেষ্টা করলেও সাড়া দিচ্ছে না চা বলয়।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বাপি গোস্বামী টাকা বিলির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘রথযাত্রার প্রস্তুতিতে যাতে ত্রুটি না থাকে সে জন্য সকলে মিলেই চেষ্টা করা হয়েছে। তবে উচ্চ আদালতে কী হয় সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।’’