ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে শিলিগুড়ি পুরসভা ব্যর্থ বলেই শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ওই কাজ করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে বারবার। সম্প্রতি ডেঙ্গি রুখতে পুরসভাগুলোর সঙ্গে কলকাতায় বৈঠক ডাকেন পুরমন্ত্রী। সেখানে ডাকা হয়নি শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র বা অন্য কাউকে। বদলে উপস্থিত ছিলেন এসজেডিএ’র চেয়ারম্যান।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের দাবি, শাসকদল যাই মনে করুক না কেন হাত গুটিয়ে বসে নেই শিলিগুড়ি পুরসভা। তাঁরা শুরু থেকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজ করে চলেছেন বলে দাবি করে বুধবার পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের কাছে চিঠিও দিয়েছেন তিনি। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টকে সামনে রেখে পুরভার চেষ্টায় শিলিগুড়িতে ডেঙ্গি কমছে বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করেন অশোকবাবু।
সম্প্রতি ডেঙ্গি প্রতিরোধে যে পুরসভা ব্যর্থ হবে তা ভেঙে দেওয়া হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। সেই আশঙ্কাতেই চিঠি পাঠিয়ে ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভা যে তৎপর তা বোঝানোর চেষ্টা বলে অনেকে মনে করছেন। এ দিন মেয়র বলেন, ‘‘রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় এখনও যেখানে ডেঙ্গি বাড়ছে সেখানে শিলিগুড়িতে তা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অথচ সব ক্ষেত্রে পুরসভাগুলোতে ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে টাকা দেওয়া হল। আর একমাত্র শিলিগুড়ি পুরসভার বদলে ওই টাকা দেওয়া হল এসজেডিএ’কে।’’ তাঁর দাবি, সংবিধান সবার ক্ষেত্রেই এক হওয়া দরকার। শিলিগুড়ি পুরসভায় বামেরা রয়েছে বলে তাদের ক্ষেত্রে আলাদা নিয়ম হবে কেন? মেয়র বলেন, ‘‘আমরা ডেঙ্গি নিয়ে কোনও রাজনীতি চাই না। কারা রাজনীতি করছে সকলেই দেখছেন।’’
পুরমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অশোকবাবু দাবি করেন সেপ্টেম্বর মাসে কোনও এক সপ্তাহে ১৯২ জনের দেহে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল। পুরসভা ডেঙ্গি প্রতিরোধের কাজে নামায় প্রতি সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। ডেঙ্গি পরিস্থিতিতে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে পুর এবং স্বাস্থ্য দফতরের হস্তক্ষেপও চেয়েছেন তিনি। জ্বর এবং ডেঙ্গি রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে শয্যা বাড়ানোর আবেদনও করেছেন। আর্জি জানিয়েছেন, ট্রপিক্যাল মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ দল পাঠানোর।
পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, গত কয়েক মাস ২ হাজার পুর কর্মী ১৫৬ টি দলে ভাগ হয়ে সাফাই, স্প্রে করার কাজ করছে। ১৭ টি ফগিং যন্ত্র দিয়ে ধোঁয়া ছড়ানো হচ্ছে। সাফাইয়ের কাজে জোর দেওয়া হয়েছে। তবে শহরে ডেঙ্গি নেই এ কথা তাঁরা বলতে চান না। সে কারণে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজ শেষ হলেও নভেম্বর এবং ডিসেম্বর দুই মাস পুর কর্তৃপক্ষ নিজেদের খরচেই সমীক্ষা চালাবেন। সচেতনতা প্রচারও চলবে।
শিলিগুড়ি পুরসভার বিরোধী দলনেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল, এসজেডিএ না থাকলে এই পরিস্থিতি কোথায় যেত সেটা মেয়র ভেবে দেখুন। ঢাক না পিটিয়ে বরং ওই সমস্ত পরিষেবা যারা দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানান।’’