সরকারি বাসে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি মালদহে। — নিজস্ব চিত্র
দাবি না মিটলেও প্রশাসনের আশ্বাসে আপাতত বেসরকারি পরিবহণ ধর্মঘট স্থগিত রাখল মালদহ জেলা বণিক মহল ও মালিক সংগঠনগুলি। তবে আশ্বাস পূরণ না হলে আগামীতে ফের গৌড়বঙ্গ জুড়ে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
তবে আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও মঙ্গলবার দিনভরই জেলা জুড়ে বন্ধ থাকে সমস্ত বেসরকারি যানবাহন। যার ফলে রাস্তায় বের হয়ে গ্রন্তব্যে পৌঁছাতে চরম নাকাল হতে হল নিত্যযাত্রীদের। রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস পর্যাপ্ত না থাকায় ভিড়ে ঠাসাধাসি করে যাতায়াত করতে হয়েছে তাঁদের। অনেকে আবার বাড়তি টাকা খরচ করে ভাড়া করে নেন ছোট গাড়িও। ভোগান্তি হয় লাগোয়া জেলা উত্তর দিনাজপুরের নিত্যযাত্রীদেরও।
টানা ধর্মঘটে ভোগান্তি বাড়তে থাকায় সমস্যা মেটাতে মঙ্গলবার সকালে বণিক মহল, পরিবহণ মালিক সংগঠন, জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ও বেসরকারি ঠিকাদার সংস্থাকে নিয়ে বৈঠকে বসেন মালদহের জেলাশাসক শরদকুমার দ্বিবেদী। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মালিক ও ব্যবসায়ীরা টোল ট্যাক্স কমানো এবং জাতীয় সড়কের অসমাপ্ত অংশের কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি জানান। জেলাশাসক দ্রুত কাজ শেষ করার ও টোলের বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদার সংস্থা ও জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে গুরুত্ব দিয়ে দেখার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘‘সামনে উৎসবের মরসুম। তাই ধর্মঘট তুলে নিতে বলা হয়েছে। আশা করছি সমস্যার সমাধান হবে।’’ তবে আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করা হলেও ফের আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে জেলার বণিক মহল। মালদহ মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘দাবি পূরণ না হলে ছটপুজোর পর ফের লাগাতার জেলা জুড়ে আন্দোলন চলবে।’’
জানা গিয়েছে, ফরাক্কা থেকে রায়গঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করছে বেসরকারি এক ঠিকাদার সংস্থা। মালদহের গাজল ও ১৮ মাইলে দুটি টোল প্লাজা তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ, জাতীয় সড়কের আইন না মেনে ওই ঠিকাদার সংস্থা নিজেদের খেয়াল খুশি মতো টোল আদায় করছে। তার বিরোধিতা করে সপ্তাহখানেক ধরে লাগাতার আন্দোলন করছিলেন তিন জেলার পরিবহণ মালিকসংগঠন ও বণিক মহল। ঠিকাদার সংস্থার মালদহের ম্যানেজার মনোজ তিওয়ারি বলেন, ‘‘টোলে মাসিক পাসের ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে। টোল কমানোর বিষয়টি নিয়ে আমরা আমাদের কর্তৃপক্ষদের জানাব।’’
আন্দোলনের জেরে এ দিন মালদহের রাস্তায় কোনও বেসরকারি যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করেনি। হাতে গোনা সরকারি বাসে হুড়োহুড়ি করে গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন তিন জেলার নিত্যযাত্রীরা। মালদহ ভেহিকেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘আজ বুধবার থেকে বেসরকারি গাড়ির পরিষেবা স্বাভাবিক হবে।’’