নিহত হস্তিশাবক। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই ফের উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে ট্রেনের ধাক্কায় মারা গেল একটি হাতি। এটি একটি হস্তিশাবক। বারবার ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুতে বিরক্ত, ক্ষুব্ধ পরিবেশপ্রেমীরা।
ক্ষুব্ধ বন দফতরও। ট্রেনের ধাক্কায় হস্তিশাবকের মৃত্যুর ঘটনায় রেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করবে বন দফতর। সোমবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি লাগোয়া গুলমার কাছে মহানন্দা বনাঞ্চলে ট্রেনের ধাক্কায় এক হস্তিশাবকের মৃত্যু হয়েছে। বন দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়া রেল লাইনের উপরে হাতির একটি দল দাঁড়িয়ে ছিল। অভিযোগ, দিনহাটা-শিলিগুড়ি ডেমু ট্রেনটি সোজা গিয়ে ধাক্কা দেয় ওই দলটিকে। ট্রেনটির গতি বেশ বেশিই ছিল বলেও মনে করা হচ্ছে। ওই দলে থাকা একটি শাবক ট্রেনের ইঞ্জিনের নীচে ঢুকে যায়। সে অবস্থাতেই ট্রেনটি বেশ কিছুটা এগিয়েও যায় বলে অভিযোগ। ট্রেনের চাকায় শাবকের দেহ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এই ঘটনায় বন দফতর নিজস্ব একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। সেই সঙ্গে জঙ্গল পথে বিধি ভেঙে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালানোর অভিযোগ দায়েরেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন দফতর।
উত্তরবঙ্গের বনপাল (বন্যপ্রাণ) তাপস দাস বলেন, ‘‘অভিযোগ দায়ের করা হবে। দফতরের তদন্তের কাজও শুরু হয়েছে। শুনেছি, ট্রেনটি বেশ জোরেই চলছিল।’’
এ দিকে সন্ধ্যা সাতটার সময় দুর্ঘটনার পরে শিলিগুড়ি থেকে সেবক হয়ে আলিপুরদুয়ারগামী লাইনে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। হাতির সঙ্গে ধাক্কা লেগে ট্রেনটির ইঞ্জিনের সামনের দু’টি চাকা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। ঘটনার পরে সারা রাত ট্রেনটিকে জঙ্গলেই দাঁড় করিয়ে রাখা হয় বলে অভিযোগ। যাত্রীদের উদ্ধার করে অন্য ট্রেনেও পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ। রেল কর্মীরা রাতভর চেষ্টা করে ট্রেনটির চাকা ওঠানোর পরে ভোরবেলায় যাত্রীদের নিয়ে ট্রেন শিলিগুড়ি জংশন স্টেশনে পৌঁছয়। এই ঘটনায় রেলের উপর ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, খাবার, জল ছাড়া সারারাত অভুক্ত অবস্থায় জঙ্গলে আতঙ্কে কাটাতে হয়েছে।