চাপের মুখে ফের খুলল স্কুল

এক ছাত্রীর যৌন হেনস্থার অভিযোগে স্কুলেরই এক ইতিহাস শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে কয়েকদিন ধরে উত্তাল এই স্কুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

পুরাতন মালদহ শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৯ ০১:২০
Share:

জিকে স্কুলে পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

স্কুল বন্ধের বিতর্কিত বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছিল সোমবার। জেলা স্কুল দফতর এবং পুরাতন মালদহের পুরপ্রধানের হস্তক্ষেপে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খুলল বাচামারি জিকে হাইস্কুল। মঙ্গলবার সকালে ক্লাস হলেও ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল অনেক কম। এজন্য স্কুল কর্তৃপক্ষের বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্তকেই দায়ী করেছে পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একটা বড় অংশ।

Advertisement

এক ছাত্রীর যৌন হেনস্থার অভিযোগে স্কুলেরই এক ইতিহাস শিক্ষককে গ্রেফতারের দাবিতে কয়েকদিন ধরে উত্তাল এই স্কুল। ছাত্রছাত্রীরা দফায় দফায় বিক্ষোভও দেখায় স্কল চত্বরে। এই পরিস্থিতিতে সোমবার আচমকাই স্কুল বন্ধের বিজ্ঞপ্তি জারি করেন কর্তৃপক্ষ। স্কুলে গিয়েও পড়ুয়ারা ফিরে যায়। জানা গিয়েছে, খবর পেয়ে জেলা স্কুল দফতর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। দফতর থেকে জানানো হয়, স্কুল বন্ধ রাখা যাবে না। প্রয়োজনে স্থানীয় পুরপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে স্কুল খোলার পরামর্শও দেন দফতরের কর্তারা। এরপর স্থানীয় ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরপ্রধান কার্তিক ঘোষের দ্বারস্থ হন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরই চেষ্টায় এ দিন সকালে স্কুল খোলার ব্যবস্থা হয়।

এ দিন পুরপ্রধান বলেন, “আমার ওয়ার্ডেই স্কুলটি রয়েছে। এছাড়া, আমি এই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রও। তবে দলীয় কাজে কয়েকদিন কলকাতায় ছিলাম। এ দিন পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। পাশাপাশি, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিষয়টি স্কুল ও পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাহাজান আলম বলেন, “অপীতিকর একটা ঘটনা ঘটায় স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে সিদ্ধান্ত বদল করে ফের স্কুল খোলা হয়েছে। এ দিন পড়ুয়াদের হাজিরা অন্য দিনের তুলনায় কম ছিল। আশা করছি, খুব শীঘ্রই চেনা ছন্দে ফিরবে স্কুল। পুলিশ ও পুরপ্রধানের সহযোগিতা আমরা পেয়েছি।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার স্কুল বন্ধের নোটিস জারি হওয়ার পর ক্ষুব্ধ কিছু পড়ুয়া নিজেরাও এ দিন সকালে স্কুলের মূল গেটে পাল্টা তালা লাগিয়ে দেয়। পরে পুরপ্রধান নিজে ক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে ওই তালা খোলানোর ব্যবস্থা করেন। যথাসময়ে খোলা হয় স্কুলের নিজস্ব তালাও। এরপর , তিনি প্রতিটি ক্লাসে শিক্ষকদের সঙ্গে গিয়ে পঠনপাঠন স্বাভাবিক রাখার জন্য পড়ুয়াদের পরামর্শও দেন। তবে বেশিরভাগ ক্লাসই এ দিন প্রায় ফাঁকাই ছিল। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রছাত্রী জানান, স্কুল বন্ধ দেখে সোমবার সবাই ফিরে যায়। তাই এ দিন যে স্কুল খুলবে, তা অনেকেই জানে না।

এ দিকে, এখনও অধরা অভিযুক্ত শিক্ষক। নির্যাতিত ছাত্রীর পরিবার এবং অন্যান্য অভিভাবকদের দাবি, থানায় অভিযোগ জানানোর পর কেটে গিয়েছে পাঁচদিন। এখনও গ্রেফতার হননি ওই শিক্ষক। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরিন্দম সরকার বলেন, “অভিযুক্ত শিক্ষক ফেরার রয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।” প্রধান শিক্ষক বলেন, “এ দিন আমাদের পরিচালন সমিতির বৈঠক হয়। সেখানেই অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি নিয়ে বোর্ডে সুপারিশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন