ম্যাচ জিততেই হবে, অশোকের তালুকে প্রচারে ভাইচুং

প্রতিপক্ষের ‘হোম গ্রাউন্ড’ থেকেই প্রচারের কিক অফ করলেন ভাইচুং ভূটিয়া। বুধবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাগরাকোট নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেছেন তৃণমূলের প্রার্থী ভাইচুং।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০১৬ ০২:১৫
Share:

প্রচারে ভাইচুং। বুধবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

প্রতিপক্ষের ‘হোম গ্রাউন্ড’ থেকেই প্রচারের কিক অফ করলেন ভাইচুং ভূটিয়া।

Advertisement

বুধবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ির ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাগরাকোট নির্বাচনী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেছেন তৃণমূলের প্রার্থী ভাইচুং। এই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা ভাইচুঙের প্রধান প্রতিপক্ষ প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা শিলিগুড়ির বর্তমান মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। অফিসের উদ্বোধন করে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাতের বেলায় মিছিলেও হাঁটলেন ভাইচুং।

শিলিগুড়ি মডেলের জনক বলে পরিচিত অশোকবাবু পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদ দখল করেছেন। সেই জবরদস্ত নেতার ঘরের মাঠই প্রচার শুরুর জন্য ভাইচুং বেছে নিলেন। বাগরাকোট এলাকায় দলের বুথ অফিস উদ্বোধন করে তিনি দাবি করলেন, ‘‘আমি মাঠের ছেলে। জিততে হলে নিজের টিমকে জোরদার করতে হয়। আমার প্রতিপক্ষও তাঁর মতো টিম সাজাবে, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু ম্যাচ আমাদের জিততেই হবে।’’

Advertisement

এ দিন সন্ধ্যায় বুথ অফিস উদ্বোধনের পরে ভাইচুঙের মিনিট চারেকের বক্তৃতাতেও স্পষ্ট নিজের টিম সাজানোর কৌশল। টিমের রক্ষণ এবং ফরওয়ার্ড লাইন দুই ঝালিয়ে নিলেন। বক্তৃতার শুরুতেই বললেন, ‘‘সকলকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। সকলে বের হতে হবে। মনে রাখবেন একটা টিমের জন্য আমরা লড়ছি।’’ দলের অন্দরের কোনও ক্ষোভ বিক্ষোভ যাতে ভোটে প্রভাব না ফেলে তার জন্যই সকলকে নিয়ে কাজ করার বার্তা দিয়ে রক্ষণ সামলানোর চেষ্টা যেমন করলেন, তেমনই বক্তৃতার শেষে দাবি করেলন, ‘‘গত পুরসভা ভোটে এই ওয়ার্ডে তৃণমূল যত ভোটে জিতেছে, আগামী বিধানসভা ভোটে সেই ব্যবধান অন্তত দ্বিগুণ বাড়াতে হবে।’’

অশোকবাবুর বাড়ির ওয়ার্ড হলেও, গত পুরভোটে এখান থেকে প্রাক্তন পুরমন্ত্রী ভোটে দাঁড়াননি। অশোকবাবু লড়েছিলেন ৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে। ২০ নম্বর ওয়ার্ডে অশোকবাবুর দলের প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জন সরকার। পরবর্তীতে রঞ্জনবাবুকে দার্জিলিং জেলা তৃণমূল সভাপতি হন। এ দিনের সভায় তিনিও ছিলেন। ফুটবল তারকা ভাইচুংকে দেখতে এ দিন বাগরাকোটে তৃণমূলের কর্মী–সমর্থকদের সঙ্গেই পথ চলতি বাসিন্দাদেরও ভিড় হয়ে যায়। ভাইচুংকে দেখে সেলফি তোলার আবেদন জানান পথচারী যুবক-যুবতীরা। আকাশি রঙের চেক জামা এবং নীল জিনস পরা ভাইচুং সকলেরই আবদার মিটিয়েছেন। হাত মিলিয়েছেন সকলের সঙ্গে।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার অবশ্য ২০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ভাইচুঙের প্রচার শুরুর বাড়তি তাৎপর্য দেখছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘যেখান থেকে ইচ্ছে ভাইচুং প্রচার শুরু করতে পারেন। আমরা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শত্রু হিসেবে দেখি না। উনি ভাল ফুটবল খেলোয়াড়। কিন্তু তিনি যে রাজনীতির মাঠে যে কার্যকরী নন, তা গত লোকসভা ভোটেই প্রমাণ মিলেছে।’’

অফিস উদ্বোধনের পরে কর্মী-সমর্থকদের ভিড় থেকে উড়ে আসে খানিকটা পথ মিছিলে হাঁটার অনুরোধ জানান। সামনে ভাইচুংকে নিয়ে রাতের বেলাতেই মিছিল শুরু হয়। বাগারোকোটের ঘিঞ্জি গলিতে হাঁটতে হাঁটতে কোন রাস্তা কোন দিকে যায়, তা জানতে চেয়েছেন তৃণমূল নেতাদের। গত লোকসভা ভোটে ওই এলাকা থেকে তৃণমূল কত ভোট পেয়েছে তাও জেনে নিয়েছেন। সেলফি তোলার শেষে সকলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বলেছেন, ‘‘এ বার খাটতে হবে কিন্তু।’’ ভাইচুঙের আগে বলতে উঠে তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ পাল জানােন, ‘‘দলনেত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, ভাইচুং জিতলে মন্ত্রী হচ্ছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন