বংশীবদন বর্মণ। —নিজস্ব চিত্র।
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের খুব বেশি দেরি নেই। তার আগেই হঠাৎ ‘বেসুরো’ হলেন দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপলস্ অ্যাসোসিয়েশনের নেতা বংশীবদন বর্মণ। এত দিন তৃণমূলের সঙ্গে থাকলেও আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জোড়াফুল শিবিরের কাছে আসন সমঝোতার দাবি জানালেন তিনি। সেই সঙ্গে শুক্রবারের জনসভা থেকে হুঁশিয়ারি, শর্ত পূরণ না হলে বিজেপিকে সমর্থন করার।
মাথাভাঙা মেলার মাঠে দ্য গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের একটি জনসভায় বক্তব্যের সময়ে বংশীর দাবি, বিগত নির্বাচনগুলিতে মাথাভাঙায় তৃণমূল যত ভোট পেয়েছে তা এই সংগঠনের জন্যই। তবে বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের জয়লাভ না করতে পারার কারণ গোষ্ঠী কোন্দল। তাঁর ‘শর্ত’ ভোটে যদি তাঁদের সংগঠনের প্রয়োজন হয় তৃণমূলের তবে দু’হাজার রাজবংশী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৫০টি হাই স্কুলকে অনুমোদন দিতে হবে। উত্তরবঙ্গের ২৫টি আসন ছেড়ে দিতে হবে সংগঠনের জন্য। অর্থাৎ, ২৫ টি আসনে ভোটে লড়তে চায় দি গ্রেটার কোচবিহার পিপলস্ অ্যাসোসিয়েশন।
তাঁর দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে ভোট দিয়ে জয়ী করানোর পরেও তাঁর বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছিলেন জগদীশ। বংশীর অভিযোগ, জগদীশ না কি বলেছেন ‘রাজবংশী ডেভলপমেন্ট বোর্ড’ থেকে আদৌ কোনও কাজ করা হচ্ছে না। এই মন্তব্যকে ‘বেইমানি’ বলেই মনে করছেন বংশ। তাঁর দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার যদি কোচবিহারকে পৃথক রাজ্য হিসেবে মান্যতা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় তা হলে সংগঠন বিজেপিকে সমর্থন করবে। নিজের ‘যুক্তি’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেস বেইমানি করেছে তাই তাদের সঙ্গে ‘বেইমানি’ করলে সেটাকে আর বেইমানি বলা যায় না।’’ ডেভলপমেন্ট বোর্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘গ্রেটার কোচবিহার পিপলস্ অ্যাসোসিয়েশনের দু’জন রয়েছে। বাকি সবাই তৃণমূলের। তাই রাজবংশীদের উন্নয়নে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।’’ বংশীর দাবি, রাজবংশীদের উন্নয়নের স্বার্থে প্রয়োজন স্ব-শাসিত বোর্ড।
বিগত দিনে বংশীবাদন বর্মন ও তাঁর সংগঠন প্রতিটি নির্বাচনে সরাসরিভাবে তৃণমূলকে সমর্থন করেছিল। শুক্রবারের পরে ‘বেসুরো’ মন্তব্য আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, ‘‘ বংশী আলাদা একটি সংগঠন করেন। অতীতে বিভিন্ন নির্বাচনে তৃণমূলকে সমর্থন করেছিলেন। ভোট আসলেই তিনি দর কষাকষি করেন। সেই উদ্দেশেই ওঁ এই ধরনের বক্তব্য রাখছেন। এই বিষয়ে যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার তা নেবে রাজ্য নেতৃত্ব।’’