প্রতীকী ছবি।
হঠাৎ ঝড় এসেও যেন থেমে গেল। প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন বা পোস্টার কোনও কিছুরই তাড়া নেই। কেউ ঘুরে বেড়াচ্ছেন শ্বশুরবাড়িতে। কেউ আবার একঘেয়েমি কাটাতে ঝটিকা সফরে চিলাপাতার জঙ্গলে। কোচবিহারে ভোটের প্রার্থীদের অনেকেই এখন এ ভাবেই দিন কাটাচ্ছেন।
কোচবিহার জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী আনোয়ার হোসেন দিনহাটার বাসিন্দা। তিনি জানান, প্রচারে কীভাবে নামবেন, তার একটা পরিকল্পনা তৈরি করে রেখেছিলেন। ভরসা রেখেছিলেন সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এবং টেলিফোনেও। কিন্তু সব যখন স্থগিত, তখন তিনিও ছুট দিয়েছেন। বললেন, “শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দু’দিন কাটিয়ে এলাম। মনটা তাজা হয়ে গেল। তবে এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।”
তবে শুধু বিরোধী নয়, শাসক দলেরও এক প্রার্থী গত রবিবার ঢুঁ মেরেছেন চিলাপাতায়। কোচবিহার ১ ব্লকের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের এক প্রার্থী জানান, “একঘেয়ে ওই কাজ আর ভাল লাগছিল না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘তা ছাড়া তাড়াহুড়ো করে কী হবে? জিতব তো আমরাই। তাই ঘুরে এলাম একটু চিলাপাতা।”
এই কথাতেই আবার এলাকার মানুষ কটাক্ষ করছেন। তাঁরা বলছেন, ‘‘সামান্য ভোটের প্রচারেই একঘেয়েমি লাগছে। এরপর টানা পাঁচ বছর তিনি আমাদের হয়ে কাজ করতে গিয়ে আবার একঘেয়েমিতে ভুগবেন না তো!’’ আবার অন্য কেউ বলছেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিকে সারা বছরই কাজ করতে হয়। এখনই তাঁরা ছুটির কথা ভাবলে একটু ভয় ভয়ই করে।’’
ওই ব্লকেরই ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের শাসক দলের প্রার্থী নন্দ বর্মন প্রতিমা তৈরি করেন। ভোটের দামামায় প্রায় তিন সপ্তাহ সেই কাজ লাটে উঠেছিল। এখন কাজ শুরু করেছেন। তিনি বলেন, “ওই করে তো সংসার চালাই। তাই সুযোগ পেয়ে ফের কাজ শুরু করেছি। তবে গ্রামের মানুষ আমাকেই সমর্থন করেছেন।”
তবে এই গরমে টানা ভোটের কাজ করতে গিয়ে শরীরে ধকল কিছু কম যায়নি কারও। কোচবিহার তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, উদয়ন গুহ দিনে দু-তিনটে জায়গায় গিয়েই প্রচার শেষ করে দিচ্ছেন। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে দলীয় অফিসেই সময় দিচ্ছেন বেশি। সিপিএমের কোচবিহারের জেলা সম্পাদক অনন্ত রায়ও তাই। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “৫ মে ধরে নিয়ে প্রচার করছি।” নিখিলবাবু বলেন, “আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি।” আর অনন্তবাবু বলেন, “যা অবস্থা চারদিকে তাতে অনেককিছু ভাবতে হচ্ছে।”
বিজেপির আরেক নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করেই ফেসবুক পোস্টে শাসক দলকে কটাক্ষ করতেন। গত চারদিনে একটি মাত্র পোস্ট করেছেন তিনি। তিনি বলেন, “প্রচারের কাজেই আছি। সময় হলে ফের পোস্ট শুরু হবে।”