ভোটের উত্তাপ ছড়াল মালবাজারেও

ভাঙচুর হয়েছে এক তৃণমূল সমর্থকদের গাড়ি। ভাঙা হয়েছে মালবাজারে বিজেপির অফিসও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিশকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৫
Share:

বিজেপি-তৃণমূলের সংঘর্ষ ঘিরে শুক্রবার অগ্নিগর্ভ মালবাজার। ভাঙচুর হয়েছে এক তৃণমূল সমর্থকদের গাড়ি। ভাঙা হয়েছে মালবাজারে বিজেপির অফিসও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিশকে। এ দিন মালবাজারে সিপিএমের জোনাল কার্যালয়ে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগও উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

সকাল থেকেই চা বলয় ও গ্রামাঞ্চলের বিজেপিকর্মীরা জোট বেঁধে মালবাজারের দিকে আসতে শুরু করেছিলেন। একসঙ্গে মনোনয়ন দিতে যাবেন, এমনটাই ঠিক ছিল। মালবাজারে আগে থেকেই তৃণমূলের অনেকে জড়ো হয়েছিলেন। একের পর এক বিজেপি সমর্থকের গাড়ি ঢুকতেই ঢিল বৃষ্টি শুরু হয়। আতঙ্কে বিডিও অফিস চত্বরে দোকানের ঝাঁপ বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

এর পর শহরের অন্য প্রান্তে গুরজংঝোরা লাগোয়া এলাকায় বিজেপির মালবাজার মণ্ডল দফতরে দলের কর্মী-সমর্থকেরা জড়ো হন। অভিযোগ ওঠে, সেখান থেকে বেরিয়ে পাল্টা মার দিতে গিয়ে তৃণমূলের গাড়িতে ভাঙচুর করেন তাঁরা। বিজেপির নেতা পঙ্কজ তিওয়ারি অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেন, ‘‘পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরে তাদের সামনেই তৃণমূলের লেঠেল বাহিনী আমাদের কার্যালয় গুঁড়িয়ে দেয়।’’ ওই কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ও বিজেপির গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগও ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

Advertisement

মালবাজারের তৃণমূল ব্লক সভাপতি তমাল ঘোষের অবশ্য দাবি, ‘‘বিজেপি কর্মীদের ছোড়া পাথরে টাউন তৃণমূল নেতা অপু সরকারের পা জখম হয়েছে।’’ মালবাজারের চেয়ারম্যান তথা ব্লক তৃণমূলের পর্যবেক্ষক স্বপন সাহার অভিযোগ, মালবাজার শহরে বিজেপি অশান্তি ছড়াতে চাইছে। একই সঙ্গে বিজেপির দফতর ভাঙচুর বা তাতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। উল্টো দিকে, বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলার পর্যবেক্ষক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘পুলিশ সম্পূর্ণ ভাবে তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। সে জন্য তৃণমূল সুবিধা পাচ্ছে।’’ তিনি জানান, এ দিন না পারলেও বিজেপি যে ভাবেই হোক মনোনয়ন দেবেই।

সিপিএমের অভিযোগ, তাদের মালবাজার দফতরে তৃণমূল হামলা করেছে। নগদ ৩০ হাজার টাকা ও ১০০টি চেয়ার লুঠের অভিযোগও এনেছে সিপিএম। সিপিআইয়ের কার্যালয়ের পতাকা, নথিপত্রও বাইরে বের করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আবার সিপিএম দফতরের সামনে তৃণমূলের এক কর্মীকে মারধর করে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে পাল্টা অভিযোগও উঠেছে।

সিটুর জেলা সম্পাদক জিয়াউল আলমের দাবি, ‘‘হারবে জেনেই তৃণমূল এই আচরণ করছে।’’ মালবাজারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তৃণমূল নেতাদের মতো আচরণ করছেন বলেও জিয়াউল অভিযোগ করেন। পুলিশ সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তৃণমূলের স্বপন সাহার বক্তব্য, ‘‘প্রার্থী না পেয়ে বামেরা নিচুস্তরের রাজনীতির খেলায় নেমেছে।’’ মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরে সতর্ক নজর রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন