পুলিশের মামলায় আমরা-ওরা  

থমথমে পরিবেশের মধ্যেই ফের এক বিজেপি কর্মীকে মারধর ও আরেকজনের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। রবিবার দুপুরে চোপড়ার নারায়ণপুর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

মেহেদি হেদায়েতুল্লা

চোপড়া শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৯
Share:

নজর: পুলিশের টহল থমথমে চোপড়ার লক্ষ্মীপুরে। নিজস্ব চিত্র

থমথমে পরিবেশের মধ্যেই ফের এক বিজেপি কর্মীকে মারধর ও আরেকজনের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। রবিবার দুপুরে চোপড়ার নারায়ণপুর এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

বিজেপির অভিযোগ, এ দিন দুপুরে তাঁদের কর্মী ইউনুস আলি হাটে যাচ্ছিলেন। সে সময় শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা রাস্তা আটকে তাঁকে মারধর করে। মাথায় চোট পেয়েছেন তিনি। চোপড়ার দলুয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে তাঁকে। বিকেলে বিজেপি কর্মী মহম্মদ পহীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের তৎপরতায় আগুন নেভানো হয়। বিজেপি নেতা অসীম সিংহ বলেন, ‘‘এ দিন বিনা প্ররোচনায় আমাদের কর্মীকে মারধর করা হয় ও আরেক কর্মীর বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।’’ জেলা পুলিশ শ্যাম সিংহ সুপার জানিয়েছেন, ‘‘এলাকায় পুলিশি টহল চলছে। পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মিথ্যা। পুলিশ আইন মেনেই কাজ করছে।’’

অন্যদিকে চোপড়ার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জাকির আবেদিন বলেন, ‘‘বিজেপির উপর কোনও হামলা করা হয়নি বা আগুন ধরানো হয়নি। সব মিথ্যে অভিযোগ।’’

Advertisement

শনিবার রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে চারজন তৃণমুল সমর্থক। আট জন কংগ্রেস সমর্থক। তৃণমূল সমর্থকরা রবিবার আদালতে জামিন পেয়ে যান। এই নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কংগ্রেস সমর্থকদের এ দিন জামিন হয়নি। তাদের আগামী ১৮ এপ্রিল ফের আদালতে তোলার নির্দেশ দেন ইসলামপুরের এসিজেএম। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ধৃত কংগ্রেস সমর্থকদের নাম সহিদুল ইসলাম, আসরুল ইসলাম, মুজফ্ফর হোসেন, মকসুদ আলম, আসাদুল হক এবং মহম্মদ সোলেমান। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৪১ ও ৩২৬ ৩০৭,৪২৭ এবং ৩৪ মামলায় দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি ধারা জামিন অযোগ্য। অন্য দিকে ধৃত তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের বিরুদ্ধে ৪৪৮, ৩২৫,৩৭৯,এবং ৩৪ ভারতীয় দণ্ডবিধির মামলায় রুজু করা হয়। এরমধ্যে মাত্র একটি ধারা জামিন অযোগ্য।

কংগ্রেস চোপড়া ব্লক কংগ্রেস সভাপতি অশোক রায়ের অভিযোগ, ‘‘আমাদের দলের নিরীহ মানুষদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এ দিন সকালে আমার সাথে থানায় যান আমাদের দলের কর্মী সহিদুল। পুলিশ তাকে আটকে দেয়। অথচ গতকাল লালবাজারে গণ্ডগোল পাকানোর সময় হাতেনাতে তৃণমূলের এক প্রার্থী সহ চারজনকে ধরা হলেও সঙ্গে সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁরা কেন জামিন পেলেন আর আমাদের কর্মীরা কেন পেলেন না তা বুঝতে পারলাম না।’’

অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেস জেলা সভাপতি অমল আচার্য বলেন, ‘‘সব মিথ্যা অভিযোগ। কে জামিন পাবেন, কে পাবেন না এটা সবটাই আইনি বিষয়। এই বিষয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘চোপড়ায় জনজীবন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। শাসক দলের আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এ দিনও ভীতি প্রদর্শন করেছে। পুলিশের কাছে গেলে উল্টো তাদেরই গ্রেফতার করা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন