মাত্র আট ভোটে তৃণমূল প্রার্থীকে হারিয়ে জিতেছেন সিপিএম প্রার্থী। সহকারী রিটার্নিং অফিসার ঘোষণা করতেই তার-জালি ফুঁড়ে ঢুকে গেল দু’টি হাত। অভিযোগ, ব্যালট পেপারের একটা বান্ডিল ছিনিয়ে নিয়ে ফের তার-জালির বাইরে চলে গেল হাত।
ঘরের বাইরে পাহারায় সশস্ত্র পুলিশ। গলায় সরকারি কার্ড ঝুলিয়ে প্রশাসনিক নজরদাররা। তারই ফাঁক গলে ঘর থেকে দৌড়ে ব্যালট হাতে বেরিয়ে গেল এজেন্ট। জলপাইগুড়ি পলিটেকনিকে এমনই অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গণনাকর্মীরা। বন্ধ হয়ে যায় গণনা। নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন কর্মীরা। জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা এলে তাঁরাও বিক্ষোভে পড়েন।
প্রিসাইডিং অফিসার রাজকুমার রায়ের দেহ উদ্ধারের পরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন ভোটকর্মীরা। দিনহাটায় ভোটের কাজে যাওয়ার আগে পুলিশকর্মীরাও ক্ষোভ দেখান। তারপরেই জলপাইগুড়ির গণনাকেন্দ্রে কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হল প্রশাসনিক আধিকারিকদের। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়। জলপাইগুড়ির পলিটেকনিক কলেজের ৬ নম্বর ঘরে বিক্ষোভের পরে বাড়তি পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। এই ঘরে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের গণনা চলছিল। তখনই ব্যালট লুঠের অভিযোগ ওঠে।
বাম-বিজেপির অভিযোগ, গণনায় দখলদারি চালিয়ে তৃণমূল এই গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে। যে বুথে বাম বা বিজেপি জিতেছে সেখানে ব্যালট ছিনতাই করে ফের ভোট গুনিয়ে তৃণমূল জিতেছে। কয়েকটি বুথে বিরোধীরা দখল করলেও জয়ের শংসাপত্র দেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ বিরোধীদের।
আরও পড়ুন: জিতেও হেরে ফের জিতলেন আনসার
সরকারি ভাবে ব্যালট ছিনতাইয়ের কথা জানানো হয়নি। তবে বেশ কিছুক্ষণ গণনা থেমে ছিল বলে জেলা সদর ব্লকের তরফে জানানো হয়। জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, “যেখানে যা অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। নির্বিঘ্নেই গণনা মিটেছে।”
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পীযূষ মিশ্র বলেন, “সকলের চোখের সামনে ব্যালট ছিনতাই হয়েছে। পুলিশ থেকে সরকারি আধিকারিক কেউ কোনও পদক্ষেপ করেনি। গায়ের জোরেই আমাদের হারিয়ে দেওয়া হল।” বিজেপির যুব সংগঠনের জেলা সভাপতি শ্যাম প্রসাদের অভিযোগ, “যারা ব্যালট লুঠ করেছে তারা গণনার এজেন্ট ছিল। পুলিশ বা প্রশাসন ইচ্ছে করলেই তাদের ধরতে পারত। কিন্তু দিনের শেষে কিছুই হলো না।” শ্যাম প্রসাদের কটাক্ষ, “যখন তৃণমূল ব্যালট লুঠ করে তখন আটকানোর কোনও চেষ্টা হয় না। অথচ সংবাদমাধ্যম যাতে না ঢোকে তার জন্য পাহারা বসানো হয়। এই হল গণতন্ত্র।”