অতিরিক্ত দিনেও মনোনয়ন জমায় ‘ফার্স্ট’ হল তৃণমূল। সুযোগ পেয়েও পিছিয়ে থাকল বিরোধীরা। কমিশন সূত্রের খবর, কোচবিহারে সোমবারের মনোনয়নে জেলা পরিষদে আরও ৮টি মনোনয়ন দিয়েছে রাজ্যের শাসক দল। পঞ্চায়েত সমিতিতে ২৯টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০৯ টি মনোনয়ন দিয়েছে তৃণমূল। সেখানে বিজেপি জেলা পরিষদে আটটি, পঞ্চায়েত সমিতির ২৫ টি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৫৯ টি আসনে প্রার্থী দিতে পেরেছে। বামেরা আরও পিছিয়ে রয়েছে। মনোনয়নের এমন একদিকে বিরোধীদের বাধা আরেকদিকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিজেপির কোচবিহারে জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “মহকুমাশাসকের দফতরে যেতেই আটকে দেওয়া হচ্ছিল। সেখানে ব্লক অফিসে গিয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল। তার মধ্যেই কয়েকজন লুকিয়ে-চুরিয়ে দিয়েছে।” একইরকম অভিযোগ বামেদের। তাঁদের দাবি, ব্লক অফিসের সামনে যেতেই লাঠি হাতে তাড়া করছিল তৃণমূলের লোকজন। বাম নেতা তথা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “কেউ মনোনয়ন দিতে গেলেই তাঁকে মারধর করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কারও কাগজপত্র কেড়ে রাখা হয়েছে। সে কারণেই এমন চিত্র উঠে এসেছে।” তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য সে সব মানতে চান না। তিনি বলেন, “সবাই শান্তিপূর্ণ ভাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছে। বিরোধীদের প্রার্থী ছিল না তাই দিতে পারেনি। আমাদের দলে যারা প্রতীক পাবে তাঁরাই প্রার্থী। যদি কেউ বেশি দিয়ে থাকে তাঁকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হবে।”
সোমবারের পরে দেখা গিয়েছে, কোচবিহারে ৩৩ টি জেলা পরিষদের আসনের জন্য ১৮৬ টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল ৪৪টি, বিজেপি ৩৯, বাম ২৯ এবং কংগ্রেস ২০ জন প্রার্থী দিয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির ৩৬৬ টি আসনে ১২৩৮ টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। সেখানে তৃণমূলের ৬২৭ জন প্রার্থী রয়েছে। বিজেপির ২৭৮, বামেরা ১৫৯ এবং কংগ্রেস ৪১ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৯৬৬ টি আসনের জন্যে ৫২১৪ টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। তার মধ্যে তৃণমূল ২৯২৮ টি, বিজেপি ১২০৫ টি আসনে, বামেরা ৪৬৬ এবং কংগ্রেস ১২১ জন প্রার্থী দিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “দলের মধ্যে গোষ্ঠীবিরোধের জন্যে অনেক আসনেই একাধিক প্রার্থী রয়েছে। সেদিকে দলীয় নেতৃত্বের নজর দেওয়া উচিত। না হলে নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে হবে।”