যুব-মূল দ্বন্দ্বে জখম ২০ জন

সোমবার সকাল থেকে দিনহাটার বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় গোলমালে অন্তত ২০ জন জখম হন। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে এ দিন বিকেল পর্যন্ত দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান হয়।

Advertisement

অরিন্দম সাহা

দিনহাটা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০১৮ ০৫:২২
Share:

নজরদারি: ভোটের গতিপ্রকৃতির দিকে নজর উদয়নের। সোমবার। নিজস্ব িচত্র

কোথাও চলল গুলি, কোথাও আবার বোমাবাজি। পরিস্থিতি দিনভর এমনই নানা অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগে সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠল কোচবিহারের দিনহাটা। সোমবার সকাল থেকে দিনহাটার বিভিন্ন এলাকায় দফায় দফায় গোলমালে অন্তত ২০ জন জখম হন। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে এ দিন বিকেল পর্যন্ত দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করান হয়। গোলমালের ঘটনায় জখমদের মধ্যে তৃণমূল ও ‘নির্দল’ প্রার্থীরাও রয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, যুব তৃণমূলের সমর্থকেরাই নির্দল হয়ে দিনহাটায় বহু আসনে লড়ছেন। ওই দু’পক্ষই গোলমালে জড়ান। দুই শিবির পরস্পরের বিরুদ্ধে অশান্তির অভিযোগও তুলেছেন। পরিস্থিতির জেরে দিনহাটা ছুটে যান কোচবিহারের এসপি ভোলানাথ পান্ডে-সহ পদস্থ কর্তারা।

Advertisement

এ বার পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় থেকেই উত্তপ্ত ছিল দিনহাটা। মূলত তৃণমূলের সঙ্গে যুব তৃণমূলের মতবিরোধেই এই উত্তাপ, বলছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে। স্থানীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, দিনহাটায় এ বার পঞ্চায়েত ভোটের ‘রাশ’ কাদের হাতে থাকবে, দু’পক্ষের মধ্যে চাপানউতোরের শুরু তার থেকেই। অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের দিন ভোরের আলো ফুটতে না ফুটতেই বুথের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে ওঠে যুযুধান শিবিরের কর্মী-সমর্থকরা। বেলা যত গড়িয়েছে ততই উত্তেজনা বেড়েছে। এ দিন ১০টা নাগাদ মহকুমা শাসকের দফতরে হাজির দিনহাটা ভিলেজ ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ‘নির্দল’ প্রার্থী অধীন রায়। তৃণমূল মদতপুষ্টদের বিরুদ্ধে বুথ দখলের অভিযোগ তুলে প্রকাশ্যেই সরব হন তিনি। এমন নানা পাল্টা অভিযোগ রয়েছে যুব তৃণমূলের বিরুদ্ধেও।

অধীনবাবুর দাবি, “আমি যুব তৃণমূল কর্মী। তবে নির্দল হিসেবে গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে ভোটে লড়ছি। মূল তৃণমূলের লোকেরা মারধর করায় বুথেই থাকতে পারলাম না। তাই প্রশাসনের দ্বারস্থ হতে চাইছি।” কিছুক্ষণ বাদেই দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আটিয়াবাড়ি এলাকার হামিদুল মিঁয়াকে নিয়ে আসনে পরিজনেরা। হামিদুল দাবি করেন, “আমি তৃণমূল কংগ্রেসের পোলিং এজেন্ট ছিলাম। যুব সমর্থক নির্দলরা পেটায়।” গীতালদহের সৈকত খন্দকার দলের জেলা পরিষদ প্রার্থীর হয়ে ছাপ্পার প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত হন বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, “আমি যুব তৃণমূলের সদস্য আমি, ছাপ্পার প্রতিবাদ করায় আক্রান্ত হই। শরীরে ব্লেড চালায়।গুলিও ছোঁড়া হয়েছিল।” পুটিমারির সাবেদুল মিঁয়া বলেন, “আমি তৃণমূলের প্রার্থী। নির্দলের মদতপুষ্ট লোকেরাই আমার ওপর চড়াও হয়েছেন।”

Advertisement

অভিযোগ, বেলা বাড়তেই বোমা, গুলি, মারধরের জখমের অভিযোগ বেড়েছে। মুন্সিরহাট মাদ্রাসার একটি বুথে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ব্যালট বক্স ছিনতাই হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। আতঙ্কে বুথ ছেড়ে বেরিয়ে যান ভোটকর্মীরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে তাঁরা বুথে ফেরেন। একটি বুথে ভোট শুরুর এক ঘণ্টার মধ্যেই পুরো ভোট পড়ে যায়। নারায়ণগঞ্জেও গুলি চলে বলে অভিযোগ। প্রশাসনের এক কর্তা অবশ্য জানান, সরকারি ভাবে ওই ব্যাপার নিয়ে কোনও রিপোর্ট মেলেনি। কোচবিহারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, “বেশ কিছু দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।”

তৃণমূলের দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ দাবি করেন, “গণতান্ত্রিক পরিবেশেই ভোট হচ্ছে।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের মোবাইল বেজে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন