সিপচুর সভায়। বুধবার। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
আর হুমকি নয়। এ বার হতাশার কথাই প্রকাশ্যে বলে ফেললেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ।
বুধবার ডুয়ার্সের সিপচুতে ‘বলিদান দিবস’ উদযাপন করতে গিয়ে গুরুঙ্গ বলে ফেলেন, মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে এলেই পাহাড়ি রাস্তায় লম্বা লাইন দিয়ে ভিড় করেন সকলে। কেউ ডাকেন মা, কেউ আম্মা কেউ আবার দিদি। নিজেকে এ সব দেখে দেশের বাইরের মানুষ বলে মনে হয়। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে পাহাড়বাসীরা এমন আপ্লুত হয়ে ওঠেন তখন নিজেকে ভারতের বাসিন্দা বলেই মনে হয় না। আমি কি পাকিস্তান, বাংলাদেশ বা নেপালের বাসিন্দা? তা হলে সেখানে আমাকে পাঠিয়ে দিলেই তো হয় আমাকে।’’
অথচ এই গুরুঙ্গ এক সময় মুখ্যমন্ত্রীকে নিজেই মা বলে সম্বোধন করেছিলেন। কলকাতায় এসে তৃণমূলের সভাতেও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পাহাড়ে তৃণমূলের প্রভাব বাড়তে শুরু করায় ক্রমশ কোণঠাসা গুরুঙ্গ বেশ কয়েকবার সরাসরিই হুমকি দিয়েছিলেন শাসক দলকে।
এ দিন, সভার শুরু থেকেই মোর্চা নেতাদের মেজাজ ভাল ছিল না। এই বলিদান দিবসে প্রথম প্রথম ভিড় হত। গত বছর হাজারল দু’য়েক লোক হয়েছিলেন। এ বছর এক ধাক্কায় অর্ধেক কমে হাজার খানেকে গিয়ে দাঁড়ায়। এক সময় মাঠে লোকের তুলনায় গাড়ির সংখ্যা বেশি করে চোখে পড়ছিল। তারপরেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে হতাশা ঝড়ে পড়ে।
তবে পাল্টা আক্রমণও করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়বাসীদের জন্য যে একাধিক বোর্ড গড়েছেন, সে প্রসঙ্গে গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘এ বার তো পশুপাখিদের জন্যও বোর্ড হবে।’’
যে কথা শুনে তুমুল প্রতিক্রিয়া হয়েছে। তৃণমূলের পাহাড় কমিটির মুখপাত্র বিন্নি শর্মা বলেন, ‘‘গুরুঙ্গ পাহাড়ের সব সম্প্রদায়ের মানুষদের অপমান করেছেন।’’ বিশ্বকর্মা বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান ইয়াকিন লামেসাঙ্গে বলেন, ‘‘কুরুচিকর মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়া দেব না।’’ শেরপা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিমা ওয়াংদি শেরপার কথায়, ‘‘গুরুঙ্গ মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।’’