তমন্না ভাটিয়ার দিনরাতের খাবার অতি সাধারণ! ছবি : সংগৃহীত।
কড়াই থেকে গরম শিঙাড়া তুলে ঢেলে দেওয়া হল বেতের ঝুড়িতে। দেখে নিমেষে মনে পড়ে গেল কিছু স্মৃতি। কামড় দিতেই বেরিয়ে আসা ধোঁয়া। পাতলা মুচমুচে খোলের ভিতর থেকে উপচে পড়া পুর। তাতে শীতের ফুলকপি, কড়াইশুটি, হলদে রঙের আলুর টুকরো, বাদাম। নোনতা-ঝাল-মিষ্টি স্বাদের এক অনবদ্য মিশ্রণ। কিন্তু স্বাস্থ্য সচেতনদের কাছে ওই স্মৃতিই সার। কোলেস্টেরল, গ্যাস-অম্বল, ওজন বৃদ্ধির ভয়ে শিঙাড়া-সহ আরও নানা প্রিয় খাবার থেকেই মুখ ফেরাতে বাধ্য হন তাঁরা। অথচ অভিনেত্রী তমন্না ভাটিয়া বলছেন, তিনি শিঙাড়া খেতে ভালবাসেন, নানা ধরনের চাটও তাঁর প্রিয়। আর ইচ্ছে হলে সেই সব তিনি খানও। তার পরেও স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট বজায় রাখতে তাঁর অসুবিধা হয় না কোনও।
এক পডকাস্টে নিজের খাওয়াদাওয়ার নিয়ম এবং অভ্যাস নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেছেন তমন্না। তিনি বলেছেন, ‘‘যেহেতু আমি খেতে ভালবাসি, তাই প্রিয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছে হলে নিজেকে আটকে রাখি না। আর আমি খুব কঠিন ডায়েটও করি না। সকাল থেকে রাত অবধি আমি যা খাই, তা অল্প বিস্তর যে কোনও সাধারণ মানুষই খান। ’’
সকালে
এক বাটি স্মুদি খেয়ে দিন শুরু করেন তমন্না। তা তৈরি করা হয় গ্লুটেন বর্জিত গ্রানোলা, খেজুর, কাঠবাদাম থেকে তৈরি দুধ, কলা এবং নানা ধরনের বেরি জাতীয় ফল মিশিয়ে।
তবে রোজই যে প্রাতরাশে একই জিনিস খান, তা নয়। কোনও কোনও দিন ৩টে ডিম দিয়ে পোচ বা ওমলেটও খান। সঙ্গে থাকে নানা রকমের সব্জি।
দুপুরে
ডাল-ভাত-তরকারি। তমন্না জানিয়েছেন, তিনি ডাল-ভাত খেতে সবচেয়ে ভালবাসেন। তাঁর কাছে ওই খাবারটিই সবচেয়ে আরামদায়ক খাবার বলে মনে হয়। অভিনেত্রী বলেছেন, ডাল-ভাতের বদলে কোনও কোনও দিন ভাতের সঙ্গে কাড়িও খান তিনি। যা বেসন আর দই দিয়ে তৈরি করা হয়। আবার কখনও সখনও দুপুরে এক বাটি খিচুড়িও খান।
বিকেলে
বিকেলের জলখাবার সাড়ে ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে খেয়ে নেন তমন্না। স্বাস্থ্যকর কিছু খেতে হলে নানা রকমের বাদাম, কয়েকটি খেজুর খান তমন্না। তবে এই সময়ে মাঝে মধ্যে শিঙাড়া, চাট, মুম্বইয়ের জনপ্রিয় সেউপুরি বা ভেলপুরিও চেখে দেখেন তিনি।
তমন্নার মতে, চাট যদি স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে তৈরি করা হয়, তবে তা শরীরের জন্য উপকারীই হতে পারে। তিনি বলছেন, ‘‘আমি চাট খেতে বড্ড ভালবাসি। এক বার খুব কড়া ডায়েটে ছিলাম বলে আমার চাট খাওয়া বন্ধ ছিল কয়েক দিন। কিন্তু আমার চাট খাওয়ার ইচ্ছে এতটাই বাড়তে শুরু করল যে, আমি রাঙাআলু দিয়ে চাট বানিয়ে খেলাম।’’ কিন্তু ডায়েটে শিঙাড়া? তমন্না জানাচ্ছেন, সারা সপ্তাহ নিয়ম মেনে খাওয়া দাওয়া করলে মাঝে মধ্যে এক-আধটা শিঙাড়া খেয়ে নিয়ম ভাঙা যেতেই পারে!
সন্ধ্যায়
খাওয়া নয়, শরীরচর্চা। সন্ধ্যায় ঘণ্টাখানেকের জন্য শরীরচর্চা করেন অভিনেত্রী। এ ব্যাপারে কোনও রকম আপস করেন না। ফাঁকিরও কোনও জায়গা নেই। আর রাতে কতটা খাবেন, তা-ও নির্ভর করে সন্ধ্যার এই শরীরচর্চার উপরেই।
রাতে
রাতে সাধারণত প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতেই পছন্দ করেন তমন্না। অধিকাংশ সময়েই দু’টো ডিম আর কিছু শাকসব্জির স্যালাড বা তরকারি খান। তবে শরীরচর্চা যদি বেশি হয়ে যায় আর অনেকটা ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলেন, তখন রুটি, ভাত এবং নানা ধরনের শর্করা জাতীয় খাবার বেশি করে খান তিনি।
মিষ্টি
মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে হলে খেজুর খান তমন্না। তিনি বলছেন, ‘‘আমার মনে হয় খেজুর চকোলেটের থেকে বেশি স্বাস্থ্যকর। এতে ভাল ফাইবার আছে, শরীরের জন্য জরুরি ভিটামিন এবং খনিজ রয়েছে। পাশাপাশি, এর স্বাদও ভাল। মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছে দমন করার জন্য এর থেকে ভাল কিছু হতেই পারে না।’’
চা-কফি
চা এবং কফি, দু’রকম পানীয়ই খেতে পছন্দ করেন তমন্না। তবে অভিনেত্রী বলছেন, ‘‘কফি আমার কাছে জলের মতো। যখন তখন ব্ল্যাক কফি খাই। সকালে আমার ঘুম ঠিক করে ভাঙে না কফি না খেলে। ’’ এর পাশাপাশি দুধ এবং মশলা দেওয়া চা-ও খেতে ভালবাসেন তমন্না। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই চায়ের প্রতি একটা অদ্ভুত আবেগ আছে আমার। হয়তো সব সময় খাই না, কিন্তু যখন খাই এক চুমুকেই মন ভাল হয়ে যায়।"