এনআরসি প্রচারে বিজেপির ঝুলিতে এবার নমশূদ্র তাস

এবার বিজেপির হয়ে সরাসরি মাঠে নামল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। এবং স্পষ্টই জানিয়ে দিল, নতুন নাগরিকত্ব আইনে দেশের সমস্ত হিন্দু ভারতের নাগরিক। এখন পরিচয়পত্র হাতে পাওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫৯
Share:

প্রতীকী চিত্র

ভিতরে ভিতরে প্রচার চলছিলই। এবার বিজেপির হয়ে সরাসরি মাঠে নামল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।

Advertisement

এবং স্পষ্টই জানিয়ে দিল, নতুন নাগরিকত্ব আইনে দেশের সমস্ত হিন্দু ভারতের নাগরিক। এখন পরিচয়পত্র হাতে পাওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষা। রবিবার কোচবিহারের মাঘপালায় চড়কের মাঠে হিন্দু মহামিলন উৎসবে হিন্দুদের এক হয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের পক্ষে দাঁড়াতে বললেন পরিষদের নেতারা। বাংলাদেশ থেকে ভিটেমাটি ছেড়ে কীভাবে লোকজনদের এদেশে আসতে হয়েছে সেই প্রসঙ্গ তুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাকও দেওয়া হয়েছে এই হিন্দু মহামিলন উৎসবের আঙিনা থেকে।

জেলার রাজনেতিক কারবারিদের বক্তব্য, কৌশল করেই এনআরসি প্রচারের জন্য মাঘপালা এলাকা বেছেছে হিন্দু পরিষদ। কারণ, মাঘপালা নমশূদ্র অধ্যুষিত এলাকা। আশেপাশে মিলিয়ে প্রায় কুড়ি হাজার এই সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। যাদের আশি শতাংশ ১৯৭১ সালের পরে কোচবিহারে এসেছে। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের মধ্যে খুব সহজেই প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করছে বিজেপি। কার্যত কোচবিহার জেলা নমশূদ্র পরিষদ থেকে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভা পরিচালনা করেন নমশূদ্র পরিষদের কর্তাব্যক্তিরাই। সেখানে বিজেপির জেলার শীর্ষ নেতাদের অনেকেই যোগ দেন।

Advertisement

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কোচবিহার জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ থাপা বলেন, “যে সরকার হিন্দুদের স্বার্থে কাজ করবে আমরা তাদের অবশ্যই ধন্যবাদ জানাব। আর আমাদের দেশের হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। সে কথাই আমরা বলে আসছি বারবার।”

নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পর থেকেই কোচবিহারে আন্দোলনে নামে তৃণমূল। একের পর এক সভা সমিতি করে জনমত গঠনের চেষ্টা করছে তারা। বিজেপি প্রথমটায় মনে করেছিল, বাংলাদেশ থেকে যারা এপারে এসেছে (ভাটিয়া বলে পরিচিত) তাঁরা বিজেপির সমর্থনে ময়দানে নামবে। আখেরে তা হয়নি। এই অবস্থায় এদিন মাঘপালায় ওই সভায় নমশূদ্রদের ভিড়ে উল্লসিত বিজেপি।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, তাঁরা বাংলাদেশের পাবনা জেলার লোক। এর বাইরেও ওই এলাকায় ময়মনসিংহ জেলারও লোক রয়েছে।

তাঁদেরই একজন হরেরাম সিংহ বলেন, “সেই চল্লিশ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে এসেছি আমরা। এখনও অনেক স্মৃতি মনের মধ্যে ভাসে। এবারে স্থায়ী নাগরিক হতে চাই। তাই নরেন্দ্র মোদী সরকারের নাগরিকত্ব আইনে আমরা খুশি।” বিজেপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদও বাসিন্দাদের সেই জায়গা থেকেই বোঝানোর চেষ্টা করছে।

নমশূদ্র পরিষদের এক কর্তা অধীরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “বাংলাদেশ থেকে সবাইকে কীভাবে আসতে হয়েছে তা কারও অজানা নয়। দেশ যখন আমাদের সুরক্ষা দিচ্ছে তখন বিরোধিতা ঠিক নয়।”

তৃণমূলের কোচবিহার জেলার সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “বিজেপি ধর্ম ভাঙিয়ে দল করছে ওরা। মানুষ সব বুঝতে পারছে। সঠিক সময়ে জবাব দেবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন