প্রতীকী ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিতেই বঙ্গভঙ্গের দাবি নিয়ে সতর্ক আলিপুরদুয়ার পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে নজরদারি বাড়াতে আলিপুরদুয়ারের সবকটি থানাকে নির্দেশ দিলেন জেলার পুলিশ কর্তারা। এ দিকে, বাংলাভাগের দাবিতে সরব হওয়া নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বিজেপি। কারণ, বিজেপি নেতার মতে এই দাবি দলবিরোধী নয়। এরই মধ্যে বঙ্গভঙ্গের প্রসঙ্গ তুলে বৃহস্পতিবার, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কোচবিহারের তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
বুধবার করোনা পরিস্থিতি ও প্রতিষেধক দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন জেলার প্রশাসন ও পুলিশের পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর্তাদের নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই ভিডিয়ো কনফারেন্সেই বঙ্গভঙ্গের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের কাছে আলাদা আলাদা করে জানতে চান, তাঁদের জেলায় এ নিয়ে কেউ কোনও দাবি তুলেছে কিনা। এর পরই বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ি, জলপাইগড়ি, কোচবিহার ও বিশেষ করে আলিপুরদুয়ারের প্রশাসন ও পুলিশের কর্তাদের সতর্ক থাকতে বলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর ওই নির্দেশের পরই আলিপুরদুয়ার জেলায় বিষয়টি নিয়ে নজরদারি বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও কেউ কেউ এই দাবির বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। নজর রাখা হচ্ছে সেদিকেও। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পাণ্ডে বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টির উপর পুলিশের নজরদারি রয়েছে। আমরা সতর্ক আছি।’’
এই মুহূর্তে দার্জিলিং-এ রয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ দিন বঙ্গবঙ্গ প্রসঙ্গে রাজ্যপালকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যপাল দার্জিলিং পাহাড়ে বসে বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্তে লিপ্ত হয়েছেন। উত্তরবঙ্গের বিজেপি নেতাদের ডেকে বাংলাভাগে উস্কানি দিচ্ছেন। এটা সংবিধানবিরোধী। একজন রাজ্যপাল এটা করতে পারেন না। গত দশবছরে উত্তরবঙ্গে বহু উন্নয়ন হয়েছে। বাংলার মানুষ বা উত্তরবঙ্গের মানুষ বঙ্গভঙ্গ চায় না।’’
বঙ্গভঙ্গ নিয়ে দাবি তোলায় এ দিন ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়ের নামে এনজেপি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্লকের তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক। বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রথীন বসু বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গ আলাদা রাজ্যের ব্যাপারে দল কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে মানুষের কল্যাণের বাইরে কিছু নেই। মানুষ চাইলে আলাদা ব্যবস্থা হবে। যাঁরা রাজ্যের পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা তাঁদের নিজস্ব মতামত। তবে এটা দলবিরোধী বক্তব্য নয়। তাই দলে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্নই উঠে না।’’