গেরুয়া শক্তি কী ভাবে বাড়ল প্রশ্ন জেলায়

সবচেয়ে বেশি রিগিং হয়েছে গঙ্গারামপুরে। বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি। গঙ্গারামপুরের নন্দনপুর, শুকদেবপুরে পঞ্চায়েত-পর্ব থেকেই দফায় দফায় বোমাবাজি, গুলি চলেছে। পুলিশ উল্টে বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করেছে। 

Advertisement

  গঙ্গারামপুর

নীহার বিশ্বাস শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০৪:২০
Share:

যে বিজেপি গঙ্গারামপুরে একটা সময়ে সিঁটিয়ে থাকত, শনিবার তারাই কার্যত সেখানে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। এ দিন বিজয় মিছিল ঘিরে বিজেপি-পুলিশ খণ্ডযুদ্ধে গেরুয়াবাহিনীর সেই আস্ফালন প্রকাশ্যে এসেছে। বিজেপি কর্মীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে গুরুতর আহত এক পুলিশ কর্মী। বেশ কয়েক জন জখম হয়ে গঙ্গারামপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এ দিনের এই ঘটনার পরেই চর্চা শুরু হয়েছে, এত শক্তি বিজেপি কী ভাবে পেল এখানে?
লোকসভা ভোটের কিছু আগে থেকে একটু একটু করে বিজেপির বাড়বাড়ন্ত শুরু হয়। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলীয় কোন্দলের জেরে গঙ্গারামপুরে তৃণমূলের এক ডাকসাইটে জেলা নেতা কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে ঘরে বসেছিলেন। দলের একাংশের দাবি, ওই নেতার প্রচ্ছন্ন মদতে গঙ্গারামপুরে শক্তি বৃদ্ধি করেছে বিজেপি। ভোটের আগে থেকেই বিভিন্ন এলাকায় বিজেপি কর্মীদের দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গিয়েছে। ভোটের ফল ঘোষণার পরে দেখা যায়, গঙ্গারামপুর শহর ও গ্রামীণ এলাকা মিলিয়ে প্রায় ২৩ হাজার ভোটে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। যারা গত পঞ্চায়েত ভোটে গঙ্গারামপুরে দাঁত ফোটাতে পারেনি, তারা ফল ঘোষণার কয়েক দিনের মধ্যে গঙ্গারামপুর শহরে তৃণমূলের দলীয় অফিস দখল করেছে বলে দাবি। বেশ কয়েকটি তৃণমূল পরিচালিত ক্লাবে পদ্মের ঝান্ডা উঠেছে। এবং পুরো সময়টাই তৃণমূল আশ্চর্যজনকভাবে নীরব। তার পরে এ দিন শহরে ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও যে ভাবে পুলিশের উপরে হামলা করে মিছিলের চেষ্টা চালাল বিজেপি, তা দেখে তাজ্জব জেলার রাজনৈতিক মহল। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি গঙ্গারামপুরে ভাল লিড পেয়েছে বলে নিজেদের সাংঘাতিক শক্তিধর ভাবছে। তাঁরা আইনশৃঙ্খলার পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছে।’’
বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেছেন, পঞ্চায়েত ও পুরভোটে পুলিশকে নিয়ে তৃণমূল গঙ্গারামপুর-সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় অত্যাচার চালিয়েছে। সবচেয়ে বেশি রিগিং হয়েছে গঙ্গারামপুরে। বিরোধীদের মনোনয়ন দিতে দেওয়া হয়নি। গঙ্গারামপুরের নন্দনপুর, শুকদেবপুরে পঞ্চায়েত-পর্ব থেকেই দফায় দফায় বোমাবাজি, গুলি চলেছে। পুলিশ উল্টে বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতার করেছে।
বিজেপি কর্মীদের দাবি, এ সব দমনপীড়নের ফলেই লোকসভা ভোটে জেতার পর থেকে তাঁরা মিছিল করতে মরিয়া ছিলেন। এ দিন সেই মিছিলই আটকায় পুলিশ। বিজেপির জেলা সভাপতি শুভেন্দু সরকারও বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতে মানুষ ভোট দিতে পারেননি। অনেক কর্মীকে পুলিশ মিথ্যা কেসে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আজ যখন শান্তিপূর্ণভাবে হেঁটে যাচ্ছিলাম তখন পুলিশ আটকে দিল। মানুষ কত সহ্য করবে? তাই এই ঘটনা ঘটেছে।’’
পুলিশের তরফে এর কোনও জবাব দেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের একটি সূত্রে জানিয়েছে, এ দিন বিজেপি আক্রমণ করার পরেই পুলিশ পাল্টা প্রতিরোধ করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন