গণনার আগে সংঘর্ষ বিজেপি-তৃণমূলে

ভোটগণনার প্রাক্কালে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে মালদহে। রবিবার রাতের ওই সংঘর্ষে দুই তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হন। তার জেরে উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তাতে উত্তেজনা ছডিয়ে পড়ে ইংরেজবাজারের ১৩ নম্বর ওর্য়াডের সদরঘাট এলাকায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভও দেখান উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৮
Share:

ভোটগণনার প্রাক্কালে বিজেপি ও তৃণমূল কর্মীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে মালদহে।

Advertisement

রবিবার রাতের ওই সংঘর্ষে দুই তৃণমূল কর্মী গুরুতর জখম হন। তার জেরে উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা বিজেপি কর্মীদের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তাতে উত্তেজনা ছডিয়ে পড়ে ইংরেজবাজারের ১৩ নম্বর ওর্য়াডের সদরঘাট এলাকায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভও দেখান উত্তেজিত তৃণমূল কর্মীরা। পরে ডিএসপি সিদ্ধার্থ দোরজি নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। রাতভর ওই এলাকায় টহলদারি চালায় পুলিশ। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গোলমাল হয়েছিল। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’

জেলার দুই পুরসভা ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহে ভোটের সময় তেমন কোনও গোলমাল হয়নি।

Advertisement

তবে ভোটপর্ব মিটতেই দুই পুরসভা এলাকায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক সংঘর্ষ। শনিবার রাতে পুরাতন মালদহের ১ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

অভিযোগের আঙুল উঠে তৃণমূলের দিকে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবার রাতে ইংরেজবাজারের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদরঘাট তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের এলাকায় তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ, রাতে ওই এলাকার একটি ক্লাবের সামনে দুলাল চক্রবতী এবং বিশ্বজিৎ ঘোষ নামে দুই তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে বচসা শুরু হয় বিজেপি কর্মী প্রভাত চৌধুরী, ছোটন দাসের। এর পরেই প্রভাত ও ছোটন হাঁসুয়া, বাঁশ দিয়ে তাদের উপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ। মাথায় হাঁসুয়ার কোপ লাগে দুলালের এবং বাঁশের আঘাত লাগে বিশ্বজিতের। ঘটনাটি চাউর হতেই তৃণমূল কর্মীরা ছুটে গিয়ে প্রথমে দু’জনকে আহত অবস্থায় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করে। বিশ্বজিৎকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও দুলালের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। রাতেই তাঁকে রেফার করা হয়েছে কলকাতায়। এই ঘটনার পরেই উতপ্ত হয়ে উঠে এলাকা। তৃণমূল কর্মীরা প্রভাত, ছোটন এবং সুদীপ পাল নামে তিন বিজেপি কর্মীর বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। তাদের বাড়ির জানলার কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গেলে অভিযুক্ত বিজেপি কর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তৃণমূল কর্মীরা। পরে ডিএসপির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

এ বিষয়ে ওই ওর্য়াডের তৃণমূল প্রার্থী অম্লান ভাদুড়ি বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীদের হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করেছে বিজেপি কর্মীরা। তারা এলাকায় দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত। ভোটে হার নিশ্চিত জেনে এমন সন্ত্রাস করছে।’’ ঘটনাস্থলে যান মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রও। তিনি পুলিশকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় বিজেপির কোনও প্রভাব নেই। আমাদের প্রার্থী ভোটে জিতছে জেনে এ দিন আমাদের কর্মীদের উপরে হামলা চালিয়েছে বিজেপি কর্মীরা। পুলিশকে আইনত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ অভিযুক্ত বিজেপি কর্মী প্রভাত চৌধুরী ঘরছাড়া। তাঁর মা দুলু চৌধুরী বলেন, ‘‘বিজেপিকে ভোট দেওয়ায় আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে তৃণমূল। আমার ছেলে-সহ এলাকার বিজেপি কর্মীরা আতঙ্কে পালিয়েছে। জেলা নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে। তাদের কেউ মারেনি। আমাদের ছেলেদের মারতে গিয়ে ওরা নিজেদের উপরেই আঘাত করেছে।’’

পুরাতন মালদহ ও ইংরেজবাজারে একের পর এক জায়গায় বিজেপি কর্মীদের উপর আক্রমন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে বিজেপি নেতৃত্ব সোমবার জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেন। বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘ভোটে আশা করছি আমাদের ফল ভালো হবে। তখন আরও বেশি করে হামলা করা হবে। তাই এ দিন জেলা শাসকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি। জেলা প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন