ঘরে ঘরে লিফলেট দিয়ে প্রচার

অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা থেকে প্রায় সাড়ে ১৯লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ে। ওই তালিকায় রয়েছেন প্রচুর বাঙালিও, যাঁরা বিবাহ বা অন্য কোনও সূত্রে এই মুহূর্তে অসমে বসবাস করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে তাঁদের নিয়ে উদ্বেগ ছড়ায় অসম সীমানা লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলাতেও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

দলের অন্দরেই ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় এনআরসি নিয়ে সতর্ক আলিপুরদুয়ার জেলার বিজেপি নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, ভোটারদের একটা বড় অংশ দলের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন বুঝতে পেরে এনআরসি নিয়ে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জেলা জুড়ে লিফলেট বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি নেতারা। প্রাথমিকভাবে পাঁচলক্ষ লিফলেট ছাপানোর প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। পুজোর আগেই বাড়ি বাড়ি লিফলেট বিলি শুরু হবে বলে বিজেপি সূত্রে খবর।

Advertisement

অসমে এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা থেকে প্রায় সাড়ে ১৯লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ে। ওই তালিকায় রয়েছেন প্রচুর বাঙালিও, যাঁরা বিবাহ বা অন্য কোনও সূত্রে এই মুহূর্তে অসমে বসবাস করছেন। স্বাভাবিকভাবেই এর ফলে তাঁদের নিয়ে উদ্বেগ ছড়ায় অসম সীমানা লাগোয়া আলিপুরদুয়ার জেলাতেও। এ রাজ্যে এনআরসি হলে এই জেলার বাসিন্দাদের কী হবে তা নিয়েও চিন্তা বাড়ে। তার জেরে কাজ-কর্ম ফেলে কেউ হন্যে হয়ে বিভিন্ন নথি জোগাড়ের চেষ্টা করছেন, কেউ আবার রেশন কার্ড সংশোধনের লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছেন।

সম্প্রতি বিজেপি-র তরফে জানানো হয়, দলের সাংগঠনিক নির্বাচনপর্ব শেষ হলে বাংলাতেও এনআরসি-র দাবিতে আন্দোলনে নামবেন তাঁরা। কিন্তু দলের এই সিদ্ধান্তে নীচুতলায় রাজনীতি করতে যে তাঁদের প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বুধবার মাদারিহাটে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কাছে পেয়ে সেই ক্ষোভের সঙ্গে জানান দলের স্থানীয় নেতারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, এনআরসি-র আতঙ্কে অনেক এলাকাতে তাঁরা ঢুকতে পারছেন না। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে যারা বিজেপি-কে ভোট দিয়েছিলেন তাঁরাও অনেকে তৃণমূলের কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন। চারিদিকে প্রচার চলছে বিজেপি-কে ভোট দেওয়া মানেই দেশ থেকে বিতাড়িত হওয়া।

Advertisement

দল সূত্রে খবর, এই ক্ষোভের আঁচ পেয়ে ও একুশের বিধানসভা নির্বাচনের কথা ভেবে এনআরসি নিয়ে একটু সতর্ক হতে চাইছেন বিজেপির আলিপুরদুয়ার জেলা নেতৃত্ব। সে জন্যই এই লিফলেট বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। যদিও ক্ষোভের কথা মানতে নারাজ জেলা নেতৃত্ব। সেজন্যই যে এই লিফলেট বিলির সিদ্ধান্ত, তাও মানতে চাইছেন না তাঁরা।

বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘আমরা ভোটের রাজনীতি করি না। দেশের জন্য রাজনীতি করি। বুধবার রাজ্য সভাপতি এনআরসি নিয়ে আমাদের দলের অবস্থান জানিয়ে দিয়েছেন। আমরাও বলছি, এদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের কোনও ভয় নেই। কয়েক পুরুষ ধরে এদেশে বসবাস করে আসা সংখ্যালঘুদেরও আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। কিন্তু যারা অনুপ্রবেশকারী, তাদের দেশের নাগরিক বলে মানার প্রশ্ন নেই। লিফলেটে এই বিষয়গুলিই তুলে ধরব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন