প্রতীকী চিত্র।
বাড়িতে শোওয়ার ঘরে ঘুমন্ত অবস্থায় এক বিজেপি কর্মীকে গুলি করে খুনের অভিযোগ ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছে। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের দৌলতনগর বটতলা এলাকায় বুধবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানায়, নিহত এক সময় সিভিক ভলান্টিয়ার হিসাবে কাজ করতেন। তিনি এলাকায় সক্রিয় বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাঁর খুড়তুতো দাদা স্থানীয় দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি সদস্য। ওই ঘটনায় স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মী জড়িত বলে অভিযোগ তুলেছেন নিহতের স্ত্রী। তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে বিজেপির নেতা সায়ন্তন বসু দাবি করেছেন, এই ঘটনা নিয়ে তাঁরা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করবেন।
ঘটনাচক্রে, অভিযুক্ত ব্যক্তি নিহতের স্ত্রীর প্রাক্তন স্বামী। ওই বিজেপি কর্মীর সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তির স্ত্রীর সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে দাবি। সেই সময় সিভিক ভলান্টিয়ার যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের কারণেই সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি যায় বিজেপি কর্মী যুবকের। তারপরে অবশ্য অভিযুক্তের স্ত্রীকে বিবাহ করেন বিজেপি কর্মী যুবক।
ঘটনার খবর পেয়ে এদিন সকালে নিহতের বাড়ি যান উত্তর মালদহের বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু। খগেনবাবু এবং নিহতের দাদাও শাসকদলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তৃণমূল অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে। চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি। পারিবারিক কারণে নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও নিহতের পরিজনদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রাতে একই ঘরে বিছানায় ঘুমিয়েছিলেন ওই বিজেপি কর্মী। ওই ঘরেই মাটিতে বিছানা পেতে শিশুকন্যাকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী। আচমকা গুলির শব্দে স্ত্রী জেগে উঠে দেখেন বিছানায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্বামী। গলার নীচে কাঁধের কাছে একাধিকবার গুলি করায় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। স্ত্রীর অভিযোগ, বেড়ার দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছিল দুই দুষ্কৃতী। গুলির শব্দ শুনে তিনি জেগে দেখেন দু’জন দৌড়ে পালাচ্ছে। তাদের মধ্যে একজন তাঁর প্রাক্তন স্বামী বলে নিহতের স্ত্রীর অভিযোগ।
নিহতের স্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘আমার প্রাক্তন স্বামী এখন তৃণমূল করে। শাসকদলের মদতেই ও এবং বাবা মিলে স্বামীকে খুন করেছে।’’ বিজেপিরও অভিযোগ, নিহতের খুড়তুতো দাদা গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই পরিবারের উপরে একাধিকবার হামলা চালান স্থানীয় তৃণমূলের একাংশ। তাঁর জমিতে আগুন দিয়ে ফসল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘বিজেপি করার অপরাধে ওই পরিবারটির উপরে তৃণমূল অত্যাচার করেছে। পুলিশও শাসক দলের মদতে তাদের মিথ্যে মামলায় জড়িয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের ওরা সন্ত্রাস করতে চাইছে।’’ নিহতের দাদার কথায়, ‘‘এটা শাসকদলের চক্রান্ত। বিজেপি করার অপরাধেই ভাইকে খুন করা হয়েছে।’’ যদিও জেলা পরিষদের স্থানীয় সদস্য তথা শিশু, নারী ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ মার্জিনা খাতুন বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত সমস্যার জেরে ঘটনাটি ঘটেছে। রাজনীতি করতে অযথা তূণমূলের নাম জড়ানো হচ্ছে।’’
রাতে এক জন গ্রেফতার হয়েছে। এলাকায় রুটমার্চ শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।