কাঁটাতারের দু’পাশ থেকেই চলল কুশল বিনিময়। ছবি: অভিজিৎ পাল
একবার শুধু চোখের দেখা। তার জন্যই সারা রাজ্য থেকেই ছুটে এসেছিলেন অনেকে। বছরের প্রথম দিনে উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখর সীমান্ত দুই বাংলায় ছড়িয়ে থাকা পরিবারগুলির আত্মীয়দের দেখা হল।
ভারত বাংলা সীমান্তে উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের সীমান্ত নতুন বছরে বিশেষ ছাড় রয়েছে। তবে কাঁটাতারের ওপারে গিয়ে নয়, এ পার থেকেই চোখের দেখা দেখার সুযোগ মেলে। খুব কাছে থেকে পরিবারের লোকেদের সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নেন তাঁরা। ফরাক্কার বাসিন্দা বছর তিয়াত্তরের আবদুল হালিম এর কথায়, ‘‘ভাইপো তাহম্মেল ওপার বাংলায় থাকে। শেষ বার ভাইপোকে যখন দেখেছিলাম, সে তখন বছর ১৫। প্রায় ৪০ বছর আগের কথা। গত বছর শুনেছিলাম এপার বাংলার গোয়ালপোখরের কোকড়াদহ সীমান্ত এলাকাতে তার কাছে খুব কাছে পড়ে। তাকে চোখের দেখা দেখা যাবে, সেই কারণে পরিবারের সবাইকে নিয়েই ছুটে এসেছি একবার চোখের দেখা দেখে তার গলা শোনার জন্য।’’ মালদহের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের সামসুল হকের ভাই আইজুল বাংলাদেশের কাশিপুরের বাসিন্দা। তাঁকে দেখা গেল পরিবারের বাকি সদস্যদের খবর নিতে। তিনি বললেন, ‘‘খোঁজ পেয়ে কয়েক বছর ধরে এখানে আসছি। নিজের পরিবারের লোকেদের চোখের দেখা দেখতে কার না ভাল লাগে। শুধু মনে হয় একটি কাঁটাতার কত পরিবারকে আলাদা করে দিল।’’ অপর দিকে গোয়ালপোখরের শ্রীপুরের বাসিন্দা শুধাংশু বিশ্বাসের কথায়, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরেই দেখে আসছি শুধু কথা বলার জন্য দুই পারের মানুষ ভিড় জমায়। তারা শুধু চোখের দেখা দেখেই তৃপ্তি পাচ্ছেন।’’ স্থানীয় সূত্রে খবর, ‘‘বিএসএফ-এর নজর এড়িয়েই সামান্য কিছু সামগ্রীই আদান প্রদান হয়। শুধু স্মৃতিটুকু ধরে রাখতে।’’
নির্বাচনের আগে ওই মিলন মেলাও ছাড়ল না এলাকার প্রার্থীরাও। বেশ কিছু প্রার্থীকেও দেখা গেল ওই রোড ধরে প্রচার করতে।