ডিপোয় দাঁড়িয়ে বেসরকারি বাস। —নিজস্ব চিত্র।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে টোল ট্যাক্স কমানোর দাবিতে বেসরকারি বাস মালিকদের সংগঠনের ডাকা প্রথম দিনের বাস ধর্মঘটে বৃহস্পতিবার দিনভর নাকাল হলেন যাত্রীরা। এ দিন শুধু ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর দিয়ে চলাচলকারী বেসরকারি বাসগুলিই ধর্মঘটে সামিল হয়েছিল। ফলে প্রায় দু’শো বেসরকারি বাস চলেনি। অপ্রতুল সরকারি বাস ও ছোট গাড়িগুলিতে ঠাসাঠাসি করে ও ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে যাতায়াত করতে হয়। আজ শুক্রবার একই ইস্যুতে মালদহ জেলাজুড়ে বেসরকারি বাস ধর্মঘট। ফলে গোটা জেলায় যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়বেন বলে আশঙ্কা।
গত ১৯ অক্টোবর থেকে মালদহ জেলার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে গাজোল ও ১৮ মাইলে দু’টি টোল প্লাজায় কর আদায় করা হচ্ছে। টোল ট্যাক্স কমানোর দাবিতে গত ৪ ও ৫ ডিসেম্বর দু’দিন ওই দুই টোল প্লাজা দিয়ে চলাচলকারী সমস্ত বেসরকারি বাস বন্ধ রেখেছিল মালদহের বাস ও মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এর জেরে মালদহ জেলাজুড়ে যাত্রীরা চরম বিপাকে পড়েছিলেন। তার রেশ কাটতে না কাটতেই এ দিন ফের একই রুটে বাস ধর্মঘট ডেকেছিল গৌড়বঙ্গের তিন জেলা ও শিলিগুড়ির ইন্টার রিজিওনাল বাস মালিকদের সংগঠন। এ দিন মালদহ-বালুরঘাট রুটে বেশ কিছু সরকারি বাস চললেও কালিয়াচক রুটে সরকারি বাস কম চলে। ফলে মালদহ জেলা সদরের রথবাড়ি মোড়ে বাস ধরার জন্য মানুষকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়েছে। শেষপর্যন্ত ঠাসাঠাসি করে যাতায়াত করতে হয়েছে। মালদহ-চাঁচল ভায়া গাজোল রুটে কোনও বেসরকারি বাসই এ দিন না চলায় ওই রুটে চলাচলকারী যাত্রীদের দুর্ভোগ ছিল সবথেকে বেশি।
আজ, শুক্রবার একই ইস্যুতে মালদহ জেলাজুড়ে বেসরকারি বাস ধর্মঘট। মালদহের বাস মালিক সংগঠনের কর্তা কাজল রায় জানান, জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় আগে টোল ট্যাক্সের হার অনেকটাই কমানো হয়েছিল। কিন্তু জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে কর্তৃপক্ষ ফের বাস পিছু আপ-ডাউন টোল ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়েছে। বাস পিছু গাজোলে ২২৫ টাকা ও ১৮ মাইলে ১৮৫ টাকা করে ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘এই দু’টি টোল প্লাজা দিয়ে প্রতিদিন মালদহ, দুই দিনাজপুর ও শিলিগুড়িতে মোট ১৭৬ টি বাস চলে। অতিরিক্ত টোল ট্যাক্স দিতে গিয়ে প্রতিদিনই ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই দু’দিন বেসরকারি বাস ধর্মঘট চলবে।’’ মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহা বলেন, ‘‘সমস্যা মেটাতে জেলা প্রশাসন কয়েকদিন আগে আলোচনায় বসেছিল। কিন্তু সমস্যা মেটেনি। ফলে দু’দিন বাস ধর্মঘট চলবে।’’ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের মালদহের প্রজেক্ট ডিরেক্টর দীনেশ হাংসারিয়া বলেন,‘‘সরকারের তরফে যে নির্দেশনামা রয়েছে সেই অনুযায়ীই টোল ট্যাক্স আদায় করা হচ্ছে।’’ মালদহের জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি নিয়ে বাস মালিক ও ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আবারও কথা বলব।’’