নিহত: নবীন শুক্ল।
এক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। সোমবার সকালে শিলিগুড়ি থানার পঞ্জাবীপাড়ার গুরুনানক সরণির ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম নবীন শুক্ল (৪৫)। সেবক রোডের পানিট্যাঙ্কি মোড়ে তাঁর ইলেকট্রনিক্স সরঞ্জামের দোকান রয়েছে। সকালে বাথরুমে তিনি স্নান করতে যান। তখনই বাথরুমের মধ্যে থেকে হঠাৎ আওয়াজ শুনে পরিবারের লোকজন ছুটে যান। তাঁর কপালের ডান পাশে গুলির আঘাতের চিহ্ন ছিল। দেশি পিস্তলটি বাথরুমের মধ্যে পড়ে ছিল। তদন্তে গিয়ে নবীনবাবুর হাফপ্যান্টের পকেট থেকে একটি কার্তুজও পুলিশ পায়। প্রাথমিক তদন্তের পর ঘটনাটি পুলিশের কাছে আত্মহত্যা মনে হলেও তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে আগ্নেয়াস্ত্রটির কোনও লাইসেন্স নবীনবাবু বা তার পরিবারের কাছে নেই।
ব্যবসায় লোকসান ছাড়াও অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে বলে পুলিশের অনুমান। কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, গত কয়েক বছরে একাধিকবার নবীনবাবু ব্যবসার লোকসানে পড়েন। পরিবারের তরফে প্রতিবারই সাহায্য করা হয়। কিন্তু তাঁর জীবন যাপন নিয়ে পরিবারের মধ্যে নানা প্রশ্ন ছিল। অত্যাধিক মদ্যপান এবং টাকা পয়সার সমস্যাও রয়েছে। দেনার পরিমাণও বাড়ছিল। তবে আত্মহত্যার জন্য পিস্তল কেনার বিষয়টি পুলিশ দেখছে। না কি কোনও হুমকির জেরে এমন ঘটেছে, তা-ও দেখা হচ্ছে।
মৃতের বাবা হরিনারায়ণ শুক্ল ভুটানের কৃষি বিভাগের অফিসার ছিলেন। অবসরের পর শিলিগুড়িতে বড় বাড়ি করেন। নীচতলায় নবীনবাবু পরিবার নিয়ে থাকতেন। আর এক অংশে তাঁর ভাই বিশালবাবু থাকেন। সকলের হাঁড়ি আলাদা। হরিনারায়ণবাবু জানান, ‘‘বড় ছেলের ব্যবসায় মন ছিল না। বিলাসবহুল জীবন যাপনে অভ্যস্ত ছিল। তাস খেলা, বাইক নিয়ে ঘোরা, দামি কুকুর পোষা ছাড়াও বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে সময় কাটাত।’’ নবীনের বড় ছেলে দিল্লিতে বি-টেক পড়ে। ছোট জন দশম শ্রেণিতে। হরিনারায়ণবাবু বলেন, ‘‘ওঁর পরিবারের সমস্যা হচ্ছিল। মানসিক ভাবেও ও কিছুটা বিপর্যস্ত ছিল। কোথা থেকে পিস্তল, গুলি আনল। কেন এমন করল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’
এদিন সকালে বাড়ির পিছনের অংশে শৌচালয়ে বিদ্যুতের বাল্ব বা টিউবলাইট ফাটার মত আওয়াজ শোনেন পরিবারের লোকজন। দৌঁড়ে যেতেই শৌচালয়ের মেঝেতে পড়ে থাকা রক্তাক্ত দেহটি উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।