চোখে লঙ্কার গুঁড়ো ছিটিয়ে, বাইক থেকে ফেলে দিয়ে, ভোজালির কোপ মেরে এক ব্যবসায়ীর লক্ষাধিক টাকা লুঠ করে পালাল দুষ্কৃতীরা। তাদের আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেলেন না ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী এবং বছর পাঁচেকের ছেলেও। রবিবার রাতের এই ঘটনায় গুরুতর জখম ওই তিন জন আপাতত শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে চিকিত্সাধীন।
পুলিশ সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলার কালচিনি থানার বিবেকনগরের বাসিন্দা কিরণ প্রধান। পেশায় লটারির ব্যবসায়ী কিরণবাবু রবিবার রাতে তাঁর দোকান বন্ধ করার পর স্ত্রী এবং ছেলেকে নিয়ে হ্যামিল্টনগঞ্জ এলাকায় এক পরিচিতের বাড়ি নেমন্তন্ন খেতে যান। সেখান থেকে সপরিবার বাইকে করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। দোকান থেকে ফিরছিলেন বলে তাঁর সঙ্গের একটি ব্যাগে লক্ষাধিক টাকা ছিল বলে দাবি করেন ওই ব্যবসায়ী।
কিরণবাবুর বাড়ির একটু আগেই একটি নির্মীয়মাণ বাড়ি রয়েছে। সেখানে অন্ধকারের ভেতর কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁদের জন্য অপেক্ষা করছিল। বাইকটি তাদের কাছাকাছি আসতেই কিরণবাবুদের লক্ষ্য করে লঙ্কার গুঁড়ো ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। বাইক থেকে পড়ে যান তিন জনেই। এর পর ভোজালি দিয়ে তাঁদের এলোপাথাড়ি কোপানো হয়। কিরণবাবুর ছেলের ডান হাতে কোপ লাগে। তাঁর স্ত্রীর কপালে এবং ঘাড়ে কোপ মারা হয়। সোমবার সকালে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ভদ্রমহিলার মাথার চুলের কিছু অংশ পেয়েছে। ভোজালির কোপে আহত হন কিরণবাবুও। তাঁর ঘাড়ে, পিঠে এবং দু’হাতে কোপ লাগে। দুষ্কৃতীরা তাঁ স্ত্রীর কাছে থাকা সেই টাকার ব্যাগ নিয়ে এর পর চম্পট দেয়।
চিত্কার শুনে ছুটে আসেন তাঁদের প্রতিবেশীরা। তিন জনকে প্রথমে লতাবাড়ি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, সেখান থেকে পরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সোমবার সকালে তাঁদের সেখান থেকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিং হোমে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে এসেছিলেন আলিপুরদুয়ারের এসডিপিও অরিন্দম সরকার। তিনি বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের করা না হলেও পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।’’ কিরণবাবুর এক প্রতিবেশী অনয় সরকার বলেন, ‘‘গতকাল রাত সাড়ে ১১টা তখন। সবে খেয়েদেয়ে শুয়েছি। হঠাত্ চিত্কার শুনে উপরের ঘরের জানলা দিয়ে দেখি, ওঁরা তিন জন রাস্তায় পড়ে চিত্কার করছেন। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসি। পাড়ার অনেকেই এসেছিলেন। এর পর ওঁদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।’’