বক্সা বাঘ-বনে ‘তেনারা’ যে নেই, বন দফতরের অনড় দাবি সত্ত্বেও তা এক রকম স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
বছর কয়েক আগে এক বনকর্মী দাবি করেছিলেন, বাঘের দেখা পেয়েছেন তিনি। কিন্তু যে ছবি তিনি তুলে দিয়েছিলেন বনকর্তাদের হাতে, তা দেখে কিঞ্চিৎ লজ্জাই পেয়েছিলেন বক্সার এফডি।
বছর দুয়েক আগে, দাবি ছিল মিলেছে বাঘের বিষ্ঠা। কিন্তু তা বিশ্লেষণ করে সন্দেহ জেগেছিল বাঘ বিশেষজ্ঞদের। প্রশ্ন উঠেছিল, সেগুলি অদূরে খয়েরবাড়িতে সার্কাসের বন্দি বাঘের বিষ্ঠা নয় তো?
গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল বাঘ নয়, বক্সা জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চোরাশিকারিরা। কেউ বন্দুক হাতে, কারও বা হাতে তির-ধনুক।
শেষতক, বক্সায় যে বাঘ নেই তাও এক রকম মেনে নিয়েছিলেন বনকর্তারা। কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকের ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটি’র (এনটিসিএ) বিশেষজ্ঞরা আড়াল না রেখেই জানিয়েছিলেন, বাঘ যে নেই তা প্রায় স্পষ্ট। তার পরেই শুরু হয়েছিল বক্সায় বাঘ পুনর্বাসনের চেষ্টা। আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে চাপানউতোর।
এনটিসিএ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে— বক্সায় বাঘের পুনর্বাসন করতে হলে জঙ্গলে তার আদর্শ পরিবেশ গড়তে হবে। গত মে মাসে তা নিয়ে এক দফা আলোচনার পরে স্থির হয় বক্সা লাগোয়া এলাকায় বনবস্তি সরিয়ে ফেলা হবে। জঙ্গলেও বাঘের বাসস্থানের উপযুক্ত গাছ-গাছালি, জলাশয় বাড়াতে হবে। সেই সঙ্গে রুখতে হবে, বক্সা লাগোয়া ভুটান এবং অসম থেকে ঘন ঘন চোরাশিকারিদের পা পড়া। সে কাজ কি এগিয়েছে?
বন দফতরের চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন প্রদীর ব্যাস বলছেন, ‘‘বক্সা জুড়ে আমরা বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করে বনের খুঁটিনাটি বিষয়ের উপরে পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছি। সে কাজ শেষ হলে রিপোর্ট যাবে এনটিসিএ-র কাছে। তার পরে আসবে বাঘ পুনর্বাসনের প্রশ্ন।’’
বক্সার ফিল্ড ডিরেক্টর উজ্জ্বল ঘোষ বলেন, ‘‘বক্সাকে ঢেলে সাজা হচ্ছে। তারপরেই এনটিসিএ-র অনুমোদনের প্রশ্ন।’’ আর এনটিসিএ-র পক্ষে রাজেশ গোপাল বলছেন, ‘‘কটা দিন সবুর করুন না, বনটা তৈরি হোক। তারপর বাঘ পুনর্বাসনের ছাড়পত্র নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবব আমরা।’’