—ফাইল চিত্র
ইসলামপুরের সরস্বতী বিদ্যামন্দিরের অনুমোদন বাতিল করে দিয়েছিল রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। পর্ষদের সেই সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার খারিজ করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। আদালতের বক্তব্য, পর্ষদের ওই সিদ্ধান্ত আইনবিরুদ্ধ।
ওই স্কুলের আইনজীবী অরিজিৎ বক্সি জানান, গত ২২ ফেব্রুয়ারি অনুমোদন পেয়েছিল পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির এই স্কুলটি। কিন্তু অনুমোদনের পর স্কুলের নামের পাশে ঠিকানা হিসেবে ইসলামপুরের পরিবর্তে ঈশ্বরপুর লেখার অভিযোগ ওঠে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। স্থানীয় কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এ কথা প্রচার হওয়ায় গত ১৫ নভেম্বর পর্ষদ সিদ্ধান্ত নেয়, স্কুল চালানোর যে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।
সেই মতো স্কুল কর্তৃপক্ষকে পর্ষদের সিদ্ধান্ত জানিয়েও দেওয়া হয়। পর্ষদের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এ দিন সরকারি আইনজীবী জয়তোষ মজুমদার আদালতে অভিযোগ করেন, স্কুল কর্তৃপক্ষ ইসলামপুরের বদলে ঈশ্বরপুর লিখছেন। ওই বক্তব্যের বিরোধিতা করে আদালতে নথি পেশ করেন স্কুলের আইনজীবী।
পাশাপাশি, কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ আদালতে জানান, ২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার শিক্ষার অধিকার সংক্রান্ত যে আইন পাশ করেছে, তাতে কোনও স্কুলের অনুমোদন বাতিলের ক্ষমতা পর্ষদকে দেওয়া হয়নি। সেই ক্ষমতা রয়েছে রাজ্য সরকারের। তাই পর্ষদের সিদ্ধান্ত আইনবিরুদ্ধ। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি শেখর ববি শরাফ পর্ষদের সিদ্ধান্ত বাতিল করে জানিয়ে দেন, কোনও বিতর্ক থাকলে আলোচনার মাধ্যমে তা মিটিয়ে নিতে।
আদালতের রায়ে খুশি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি অশোক বণিক বলেন, ‘‘রায়ে আমরা খুশি। পরবর্তী কর্মপন্থা স্থির করতে আগামীকাল অভিভাবকদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব।’’ অধ্যক্ষ ক্ষুদিরাম রায় বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আদালতের রায়ের কাগজ হাতে পাইনি। কাজেই সেই কাগজ না দেখে কোন মন্তব্য করব না।’’ খুশি অভিভাবকমহল। এক অভিভাবক জানান, তাঁর মেয়েকে কোন স্কুলে নতুন করে ভর্তি করাবেন তা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন তিনি। আদালতের রায়ে সেই দুর্ভাবনা কাটল বলে তাঁর বক্তব্য। বিজেপির উত্তর দিনাজপুরের সহকারী সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘সত্যের জয় হল। আদালতের উপর আমাদের ভরসা রয়েছে। ছোট একটা বিষয়কে নিয়ে এই ভাবে স্কুলের অনুমোদন কেউ বাতিল করা যায় না।’’
স্কুলের অনুমোদন বাতিল হওয়ার পর ইসলামপুরের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক কয়েক ঘণ্টা অবরোধ করে রেখেছিলেন অভিভাবকেরা। পরে অবশ্য ইসলামপুরের অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রশাসন।