দার্জিলিঙের বাসিন্দা, একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রিন্সিপাল। পাহাড়ের অনিদির্ষ্টকালের বন্ধ শুরুর ২০ দিনের মাথায় চিকিৎসার জন্য সপরিবারে সমতলে নেমে এসেছিলেন। কিন্তু ফেরার সময়েই পড়েন বিপদে। বাড়তি টাকা দিতে চাইলেও কোনও গাড়িই যেতে রাজি হচ্ছিল না। শেষপর্যন্ত দার্জিলিং সদরের এক মোর্চা নেতার কাছ থেকে ‘কার পাস’ জোগাড় করে তবে মেলে গাড়ি।
একইভাবে কালিম্পঙের এক কলেজের শিক্ষক সমতলে নামার জন্য চারদিনের চেষ্টার পর এক মোর্চা নেতাকে ধরে ‘কার-পাস’ জোগাড় করেন। কিন্তু গাড়ির বদলে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই পাস দেখাতে দেখাতে সমতলে নামেন।
এ বার এই ‘কার-পাস’ দেওয়ায় আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ তুলেছেন পাহাড়বাসীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, অনেক জায়গায় টাকা নিয়ে তবে ‘কার-পাস’ দেওয়া হচ্ছে। মোর্চা নেতা নেত্রীদের ঘনিষ্ঠ, পরিবারের লোক, ও আত্মীয়স্বজনদের ক্ষেত্রে মিলছে হাতেগোনা পাস। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘অভিযোগ মিথ্যে। বনধ চলছে বলে অনেকেই নানা কুকথা রটাচ্ছেন।’’ মোর্চা সূত্রের খবর, স্থানীয় কোনও কমিটির নামে দেওয়া ওই চিঠিতে জরুরি কাজের কথা বলা ছাড়াও নেতাদের নাম ও টেলিফোন নম্বরও দেওয়া থাকে। মালপত্র বা আনাজপাতির ট্রাক, মন্দির, গুম্ফা, মসজিদের জন্য আলাদা পাস মিলছে।
পুলিশ-প্রশাসন সূত্রের খবর, নেতাদের সঙ্গে পাসের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম কিছু স্থানীয় যুবক। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, সোনাদা, ঘুম, কার্লিম্পং, জোরবাংলো থেকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছেন তাঁরা। কারও পাস লাগলে যোগাযোগ করছেন। পাস দেওয়ার জন্য ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। মালপত্রের ট্রাকের জন্য ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। আবার, পাস দেওয়ার সঙ্গে চালককে রাজি করিয়ে আনা-নেওয়ার গাড়ির ব্যবস্থা করতে অতিরিক্ত ২ থেকে ৩ হাজার নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। তবে পাস দেওয়ার সময়ই বলে দেওয়া হচ্ছে রাত ১০টার পর অথবা ভোরবেলা পাহাড় থেকে নামতে হবে। আবার সমতল থেকে ওঠার জন্য অবশ্যই তা যেন রাত ১০টার পর হয় তাও বলে দেওয়া হচ্ছে।