জেরায় ডাক আরও ১৫ জনকে

চন্দনার সবুজ ডায়েরিতেই রহস্যের চাবি

সবুজ রঙের একটি ডায়েরি। সবে মাত্র তার চারটি পাতা এখনও ওল্টানো হয়েছে। তাতেই গ্রেফতার হয়েছেন এক রাজনৈতিক দলের রাজ্য নেত্রী থেকে সরকারি পদে থাকা দু’জন। জেরায় ডাক পড়েছে ১৫ জনের।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৭ ০২:৩৮
Share:

নজরে: এই ডায়েরিই নিশানা গোয়েন্দাদের। নিজস্ব চিত্র

সবুজ রঙের একটি ডায়েরি। সবে মাত্র তার চারটি পাতা এখনও ওল্টানো হয়েছে। তাতেই গ্রেফতার হয়েছেন এক রাজনৈতিক দলের রাজ্য নেত্রী থেকে সরকারি পদে থাকা দু’জন। জেরায় ডাক পড়েছে ১৫ জনের। যাঁদের মধ্যে সরকারি পদে থাকা আরও তিন জন রয়েছেন। জলপাইগুড়ি শিশু বিক্রির জাল কোথায়-কতদূরে ছড়িয়েছে তার হদিশ পেতে সিআইডির অন্যতম অস্ত্র এই সবুজ রঙের ডায়েরি। মলাটে চন্দনার হোমের নাম ছাপানো রয়েছে। সিআইডি অফিসারদের মুখে যেটির নাম হয়েছে, ‘চন্দনার ডায়েরি।’

Advertisement

জলপাইগুড়িতে বিমলা শিশুগৃহে অভিযান চালিয়ে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হোমের কর্ণধার চন্দনা চক্রবর্তী এবং এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল সিআইডি। সে দিন হোম থেকে প্রচুর নথি বাজেয়াপ্ত করেছিল তদন্তকারীরা। সে দিন অবশ্য ওই ডায়েরির খোঁজ মেলেনি। প্রতি পাতায় ফোন নম্বর এবং ঠিকানা ঠাসা ডায়েরটি সিআইডির হাতে আসে চন্দনার ভাই মানস ভৌমিক গ্রেফতারের পর।

সিআইডির এক অফিসার জানান, জেরার মুখে হোমের কর্মী সিআইডিকে জানায়, ‘‘ম্যাডাম, ইদানিং একটা ডায়েরি লিখতেন।’’ হন্যে হয় ডায়েরির খোঁজ চালাতে থাকে সিআইডির অফিসারেরার। তার পরে জলপাইগুড়ির চার নম্বর গুমটিতে চন্দনার অফিস থেকে ডায়েরির হদিস পায় সিআইডিতে। ওই ডায়েরিতেই জুহির সঙ্গে কবে কোথায় যেতে হবে তার উল্লেখ ছিল। জুহির একাধিক ফোন নম্বর লেখা ছিল ডায়েরিতে। দার্জিলিং জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মৃণাল ঘোষ, শিশু কল্যাণ সমিতির সদস্য দেবাশিস চন্দের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ পায় সিআইডি। দু’জনকেই গ্রেফতার করেছে সিআইডি। ডেকে পাঠিয়ে জেরা চলছে মৃণালের স্ত্রী জলপাইগুড়ি জেলার শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সাস্মিতা ঘোষকেও। সিআইডির উত্তরবঙ্গের স্পেশাল সুপারেনটেনডেন্ট অজয় প্রসাদ বলেন, ‘‘যেমন সূত্র মিলছে তেমনই পদক্ষেপ হচ্ছে।’’

Advertisement

দত্তকের অনুমোদন দেয় যে কেন্দ্রীয় সংস্থা সেই কারা-র তিন শীর্ষ কর্তা এবং দুই প্রাক্তনীর নাম ঠিকানা মোবাইল এবং বাড়ির ফোন নম্বরও মিলেছে ডাযেরি থেকে। দিল্লির এক সাংসদের বাড়ির নম্বরও রয়েছে তাতে। রাজ্য এবং কেন্দ্রের দুই নেতার অফিসের ফ্যাক্স এবং বাড়ির ফোন নম্বর মিলেছে। এমনকী এক নেতার জন্মদিন কবে তাও উল্লেখ রয়েছে ডায়েরিতে। একটি লোহার টেবিলের ড্রয়ারে তালা বন্ধ ছিল ডায়েরিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন