Karandighi

‘বালির গর্ত’, ডুবে মৃত ৩ শিশু

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় গাড়ি চালক মহম্মদ সাদ্দামের তিন ছেলে-মেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির কিছুটা দূরে সুধানী নদীর চরে খেলতে যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

করণদিঘি শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০২৩ ০৯:১১
Share:

বালির গর্তে পড়ে মৃত্যু শিশু। প্রতীকী চিত্র।

নদীতে ডুবে মৃত্যু হল তিন ভাই-বোনের। বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘির দোমহনার সুধানী নদীতে ওই ঘটনার পরে, এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, পাচারকারীরা নদীখাত থেকে অবৈধ ভাবে বালি তুলে নেওয়ায়, তৈরি হওয়া গর্তে পড়ে প্রাণ গিয়েছে ওই তিন জনের। রায়গঞ্জ পুলিশ-জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। এর আগেও অবৈধ ভাবে বালি তোলা নিয়ে অভিযোগ এসেছিল। অবৈধ বালির গাড়িও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। ইদানীং বালি তোলা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। তবে নিয়মিত অভিযান চলছে। আমরা নজর রাখছি।’’

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা পেশায় গাড়ি চালক মহম্মদ সাদ্দামের তিন ছেলে-মেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির কিছুটা দূরে সুধানী নদীর চরে খেলতে যায়। মহম্মদ রিজওয়ান (৪) ও তাহসিনা খাতুন (৭) খেলতে খেলতে পা পিছলে নদীতে পড়ে গেলে, তাদের উদ্ধারের জন্য জলে ঝাঁপ দেয় দিদি রোজিনা খাতুন (১০)। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বাচ্চারা যেখানে খেলছিল, সেখানে জলের গভীরতা পূর্ণবয়স্ক মানুষের হাঁটুর কাছাকাছি। কিন্তু তার কাছেই নদী-খাতে বালিতে অনেকটা গভীর একাধিক গর্ত রয়েছে, বালি-মাফিয়ারা বালি তুলে নেওয়ায়। প্রতিবেশীরা তিন জনকে উদ্ধার করে করণদিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

তিন সন্তানকে এক সঙ্গে হারিয়ে মা হাজেরা খাতুন বারবার অজ্ঞান হয়ে পড়ছেন। ঘটনায় শোক গোটা গ্রাম শোকস্তদ্ধ। পরিবার সূত্রে খবর, রোজিনা ও তাহাসিনা স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে পড়াশোনা করছিল। পরিবারের এক সদস্য বলেন, “সাদ্দামের আর কোনও সন্তান রইল না। খুবই মর্মান্তিক। তবে কী ভাবে ওরা পড়ে গেল বলতে পারব না।’’

Advertisement

এই ঘটনাকে ঘিরে এলাকার মানুষ ক্ষোভে ফুঁসছেন। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, যে এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে তেমন স্রোত নেই। বালি-মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যে নদীর চরে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। তেমনই গর্তে পা পিছলে পড়ে মৃত্যু হয় তিন শিশুর। পুলিশ-প্রশাসনকে একাধিক বার বালি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। করণদিঘি থানার আইসি পলাশ মোহান্ত জানান, দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন