TMC

TMC MLA: ফাঁড়িতে বেঁধে তালা বন্ধ করে রেখে দেব, প্রকাশ্যে ওসি-কে হুমকি চোপড়ার তৃণমূল বিধায়কের

বুধবার ভদ্রকালী বাজারের একটি জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়েই রামগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ওসি পিন্টু বর্মণকে হুমকি দিলেন বিধায়ক হামিদুল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চোপড়া (উত্তর দিনাজপুর) শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২২ ২০:০৬
Share:

জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান

ওসি না শোধরালে ইদের পর ফাঁড়িতে বেঁধে তালা বন্ধ করে রাখা হবে। প্রকাশ্য জনসভায় পুলিশ আধিকারিককে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন চোপড়ার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান। শুধু জনসভাতেই নয়, পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েও একই ভাষায় ওসি-কে হুমকি দিতে দেখা গেল বিধায়ককে। পাশাপাশিই, উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইলাল অগ্রবালের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুললেন হামিদুল। এই ঘটনার জেরে শাসকদলের অন্দরে দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসায় তা নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।

Advertisement

বুধবার ভদ্রকালী বাজারে আয়োজিত একটি জনসভায় হাজির হয়েছিলেন হামিদুল। ওই সভায় ভাষণ দিতে গিয়েই রামগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির ওসি পিন্টু বর্মণকে হুমকি দিলেন তিনি। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘পিন্টু বর্মণ যদি এই ধরনের কার্যকলাপ না বন্ধ করে, নিজেকে না শোধরায়, তা হলে আমরা ওকে রামগঞ্জ ফাঁড়িতে বেঁধে রাখব। তালা বন্ধ করে রাখব।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করলে আমরা শ্রদ্ধা করব। কিন্তু পুলিশ যদি দালালি করে, আমরা ছেড়ে কথা বলব না।’’ বিধায়কের এই মন্তব্যের পরেই উল্লাসে ফেটে পড়েন সমর্থকেরা। হাততালিতে ভরে ওঠে জনসভা।

সভা শেষে সাংবাদিকদের সামনেও বিধায়ক বলেন, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে তো অনেক অভিযোগ রয়েছে। আজ তো পুলিশের সামনেই কত কিছু ঘটছে। কিন্তু পুলিশ কিছুই করছে না। পক্ষপাতিত্ব করছে পুলিশ। আমরা এসপি, আইসি-র সঙ্গে যোগাযোগ করব। পিন্টু বর্মণ থাকলে যে কোনও সময় বড় ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ওকে আমরাই শায়েস্তা করব।’’

Advertisement

স্থানীয় সুত্রে খবর, চোপড়ার একটি চা বাগানের মালিকানা নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছিল তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। এক দিকে, বিধায়কের সমর্থকেরা। আর অন্য দিকে, কানাইলাল এবং গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান রাইসুদ্দিনের গোষ্ঠী। হামিদুলের সমর্থকদের দাবি, এই জমি বিবাদে কানাইলাল আর রাইসুদ্দিনের হয়ে পক্ষপাতিত্ব করছিলেন ওসি। সেই কারণেই জনসভায় পিন্টুকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিধায়ক।

এ নিয়ে কানাইলাল বলেন, ‘‘বিধায়ক পুলিশকে এ সব বলে থাকলে তা ঠিক হয়নি। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। জানার পর বলতে পারব।’’ তবে বিধায়কের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোহ করেছেন রাইসুদ্দিন। তিনি বলেন, ‘‘চোপড়া থানা এলাকায় বিধায়কের কথায় পুলিশ ওঠাবসা করে। কিন্তু গোবিন্দপুর এলাকায় বিধায়ক তা করতে পারছেন না বলেই হুমকি দিচ্ছেন। বহিরাগতদের এনে সভা করে এ সব বলছেন। পুলিশ এত দিন বিধায়কের চামচাগিরি করে এসেছে। দোষীদের গ্রেফতার করেনি। তাই পুলিশকে এ সব কথা শুনতে হল।’’

পুলিশকে হুমকি প্রসঙ্গে বিজেপি-র জেলা সহ-সভাপতি সুরজিৎ সেন বলেন, ‘‘চোপড়ার ঘটনা তো শুধু একটা ঘটনা নয়। রাজ্য জুড়েই পুলিশকে তৃণমূলের নেতারা চমকাচ্ছে, ধমকাচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন