অমিতাভ মালিক হত্যায় জড়িত সন্দেহে আলিপুরদুয়ার জেলার তিন যুবককে গ্রেফতার করায় টনক নড়েছে সিআইডি ও পুলিশের। মাস দু’য়েক আগে দার্জিলিংয়ে বিমল গুরুঙ্গকে ধরতে অভিযানে গিয়ে টাকভর এলাকায় গুলিতে মৃত্যু হয় ওই অফিসারের।
তদন্তে আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়া এলেকার মহেন্দ্র কামীর নাম জানা যায়। তা ছাড়া বক্সা পাহাড়ের দাড়াগাঁওয়ের বাসিন্দে দেওয়াজ লেপচা ও নিউল্যান্ডস চা বাগানের শ্যাম কামী সহ ওই তিন জন জিএলপির সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
এই ঘটনার পর থেকেই প্রাক্তন জিএলপি সদস্যদের বর্তমান অবস্থান জানার চেষ্টা করছে পুলিশ ও সিআইডি। জেলা পুলিশের এক পদস্থ অফিসার জানান, গুরুঙ্গের সঙ্গে এখন প্রায় জনা দশ বারো সশস্ত্র জিএলপি সদস্য রয়েছেন। তা ছাড়াও উত্তপূর্ব ভারত ও নেপালের বেশ কয়েক জনও রয়েছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দার্জিলিংয়ের পরে আলিপুরদুয়ারের কালচিনি ও বক্সা পাহাড়ে ভাল সংগঠন তৈরি করেছিলেন গুরুঙ্গ। বছর কয়েক আগে সেখানকার বহু যুবক যুবতী যোগ দেন জিএলপিতে। জিএলপির সদস্যরা সরাসরি ছিল গুরুঙ্গের তত্ত্বাবধানে। এই বাহিনীর যুবকরাই সব সময় গুরুঙ্গের ছায়া সঙ্গী হয়ে থাকতেন।
আলিপুরদুয়ারের জেলা পুলিশ সুপার আভারু রবীন্দ্রনাথ জানান, সিআইডি তদন্ত শুরু করছে। তবে আলিপুরদুয়ারের পরিস্থিতির উপর পুলিশ নজর রাখছে। তবে রাজ্য গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলার প্রায় কুড়ি জন জিএলপি কোথায় আছেন, তা এখনও জানা যায়নি। কেবল এক যুবক দার্জিলিংয়ে এখনও সক্রিয় জিএলপি সদস্য হিসবে কাজ করছেন বলে খবর।
সম্প্রতি সিআইডির হাতে গ্রেফতার হওয়া দেওয়াজ লেপচার বাবা গোপাল লেপচা জানান, ‘‘ছেলে এক সময় দার্জিলিংয়ে গিয়েছিল। তার পরে সে কাজের খোঁজে সিকিমে চলে যায় সেখানে রান্নার কাজ করত।’’ পুলিশ কেন গ্রেফতার করেছে তা তাঁরা জানেন না।
২০১৫ সালে মোর্চার জিএলপি-র কালচিনির দায়িত্বে থাকা এক প্রাক্তন নেতা জানান, সেই সময় শুধু কালচিনি ব্লক থেকেই প্রায় ষাট জন যুবক যুবতী জিএলপিতে গিয়েছিলেন। আশা ছিল স্থায়ী কাজ পাবেন। তবে বছর খানেক আগে অনেকেই ফিরে এসেছেন। অনেকে আবার কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে চলেও গিয়েছেন। তবে এ ব্যাপারে মুখ কুলতে চাননি মোর্চা নেতারা। মোর্চা নেতা অশোক লামা জানান, কারা জিএলপিতে যোগ দিয়েছিল তা তাঁরা জানেন না। জিএলপি সরাসরি নিয়ন্ত্রণ করতেন মোর্চা সুপ্রিমো স্বয়ং।