সার্কিটবেঞ্চ: বেঁধেও বাঁধা হল না মঞ্চ

নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘সার্কিট বেঞ্চ উত্তরবঙ্গের মানুষের চল্লিশ বছরের দাবি। আমি চাই সার্কিট বেঞ্চ তাড়াতাড়ি হোক।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫৯
Share:

আলোচনা: সার্কিট বেঞ্চ ভবনে। নিজস্ব চিত্র

বৃহস্পতিবার রাতেই সার্কিট বেঞ্চের অস্থায়ী ভবনে হাজির হয়েছিলেন জেলা পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি। পুলিশ অফিসারদের নিয়ে পরিদর্শনও করেন তিনি। শুক্রবার সকাল ন’টায় সেখানে চলে আসেন জেলাশাসক শিল্পা গৌরীসারিয়া। ছিলেন পূর্ত দফতরের কর্তারাও। তড়িঘড়ি খবর দিয়ে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার থেকে অন্তত ৮ জন ডেকরেটরকে আনানো হয়। আদালত ভবনের পাশে রেলের যে ফাঁকা জমি রয়েছে, সেখানে মঞ্চ বাঁধার কথা বলা হয়। যাতায়াতের সুবিধের জন্য পাঁচিলের একটি অংশ ভাঙার নির্দেশও দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাজ শুরুর ঘণ্টা দুয়েক পরে হঠাৎ ফিরে যান ডেকরেটকর এবং কর্মীরা। এক কর্মীর কথায়, “আপাতত মঞ্চ হবে না।”

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে চলতে থাকা প্রশাসনিক তৎপরতা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলাশাসক। এ দিন তিনি আধিকারিকদের নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠক করেন। প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার রাতে নবান্ন থেকে ফোন করে জানানো হয়েছিল, আগামী ৩ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী সার্কিট বেঞ্চ ভবনে আসবেন। তার ভিত্তিতেই শুরু হয় প্রস্তুতি। কিন্তু শুক্রবার সাড়ে এগারোটার পরে নবান্ন থেকে প্রশাসনকে জানানো হয়, “আপাতত মুখ্যমন্ত্রী জলপাইগুড়ি যাচ্ছেন না।” সে খবর পেয়ে ফিরে যান মঞ্চ বাঁধার কর্মীরাও। তালা লাগিয়ে দেওয়া হয় অস্থায়ী আদালত ভবনে ঢোকার গেটে। এ দিকে প্রশাসনের তৎপরতা দেখে সার্কিট বেঞ্চ হওয়া নিয়ে দোলাচলে রয়েছেন জলপাইগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা।

এ দিনই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘সার্কিট বেঞ্চ উত্তরবঙ্গের মানুষের চল্লিশ বছরের দাবি। আমি চাই সার্কিট বেঞ্চ তাড়াতাড়ি হোক।’’ বৃহস্পতিবার রাজ্যের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁদের মধ্যে এই নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে নবান্নের খবর।

Advertisement

২৬ অগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে হাইকোর্টের প্রতিনিধিরা সার্কিট বেঞ্চ পরিদর্শন করেছিলেন। আইন দফতর সূত্রের খবর, সব দেখে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধনের দিনক্ষণও ঠিক করেছেন তাঁরা। সেই রিপোর্ট কেন্দ্র ও রাজ্যের আইন বিভাগকে পাঠানো হয়েছে। পূর্ত দফতর থেকেও জানানো হয়েছে, সার্কিট বেঞ্চের পরিকাঠামোর কাজ এর মধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে।

জলপাইগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধনের প্রক্রিয়া নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। ৩ সেপ্টেম্বর বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর নেতৃত্বে গঠিত ডিভিশনাল বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি রয়েছে। মামলার নিষ্পত্তি না হলে বেঞ্চ উদ্বোধন সম্ভব নয় বলে অনেকে মনে করছেন। যদিও আইনজীবীদের একাংশের ভিন্ন যুক্তি রয়েছে। রাজ্য বার কাউন্সিলের সদস্য তথা জলপাইগুড়ির আইনজীবী গৌতম দাসের কথায়, “মামলা চলছে বটে। কিন্তু বেঞ্চ উদ্বোধনে কোনও স্থগিতাদেশ নেই। রাজ্য সরকার যাবতীয় পরিকাঠামোও তৈরি রেখেছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য আগেই বলেছেন, ‘‘এটা হাইকোর্টের বিষয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন