ডেঙ্গি: শহর চায় না আর রাজনীতি

শহরবাসীদের অনেকেরই অভিযোগ, নেতাদের একাংশের ঠেলাঠেলি, দোষারোপের প্রবণতার জন্যই রোগ নিয়ন্ত্রণের কাজে অনেক সময়ে দেরি হয়ে যায়। ফলে, ভোগান্তি হয় শহরবাসীদের। শিলিগুড়ির একটি নাগরিক সংগঠনের মুখপাত্র রতন বণিক বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিদের অনেক কাজ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে করতে হয়। সেটা সকলে খেয়াল রাখেন না বলে সমস্যা হয়। জটিলতা বাড়ে। গত বছর ডেঙ্গির সময়ে সেটা দেখেছি। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর পরে দেখেছি ঠেলাঠেলির প্রবণতা কিছুটা কমেছিল।’’

Advertisement

কিশোর সাহা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৩০
Share:

রোগাক্রান্ত: উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ফিভার ক্লিনিকে বাড়ছে জ্বরের রোগী। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

এখনই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না নিলে এ বছরও ডেঙ্গির প্রকোপ শিলিগুড়িতে ভয়াবহ আকার নিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকদের অনেকেই। তা নিয়ে সরব হয়েছেন শিলিগুড়ির একাধিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও। তাই শিলিগুড়ি নাগরিক সমিতি, অভিভাবক মঞ্চের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক তরজা দূরে সরিয়ে সব জনপ্রতিনিধিদের ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণের জন্য সব রকম পদক্ষেপের আর্জি জানানো হয়েছে।

Advertisement

শহরবাসীদের অনেকেরই অভিযোগ, নেতাদের একাংশের ঠেলাঠেলি, দোষারোপের প্রবণতার জন্যই রোগ নিয়ন্ত্রণের কাজে অনেক সময়ে দেরি হয়ে যায়। ফলে, ভোগান্তি হয় শহরবাসীদের। শিলিগুড়ির একটি নাগরিক সংগঠনের মুখপাত্র রতন বণিক বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিদের অনেক কাজ রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে করতে হয়। সেটা সকলে খেয়াল রাখেন না বলে সমস্যা হয়। জটিলতা বাড়ে। গত বছর ডেঙ্গির সময়ে সেটা দেখেছি। বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর পরে দেখেছি ঠেলাঠেলির প্রবণতা কিছুটা কমেছিল।’’

তাই এ বার আগেই নেতাদের কাছে আর্জি জানিয়েছেন নাগরিকদের অনেকেই। শিলিগুড়ির অভিভাবক ফোরামের তরফে সন্দীপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ক’দিন আগেই পঞ্জাবিপাড়ার শিশুটির মৃত্যু হল। আরও মৃত্যু রুখতে বাছাই করে ওয়ার্ডগুলিতে অভিযান হোক।’’

Advertisement

শিলিগুড়িতে বামেদের দখলে থাকা পুরসভার সঙ্গে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের চাপানউতর নতুন কিছু নয়। গত বছর সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গির ভয়াবহ প্রকোপের সময়ে পুরসভাকে কাঠগড়ায় তুলেছিল তৃণমূল। পাল্টা রাজ্য প্রাপ্য বরাদ্দ আটকে রাখায় পুরসভা অনেক কাজ করতে পারছে না বলে দাবি করেছিলেন মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।

ঘটনাচক্রে, গত বছর যে সব এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ ছড়িয়েছিল, সেখানে এ বারও সংক্রমণের খবর রয়েছে পুরসভার কাছে। মেয়র জানান, কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে রোগীরা জ্বর নিয়ে হাসপাতাল, নার্সিংহোমে যাচ্ছেন। তাঁদের ব্যাপারে খোঁজ রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি ৭ বছরের সায়েশা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যুও ডেঙ্গিতে হয়েছে বলে চিকিৎসকদের একাংশের মত। পুরসভার যে ওয়ার্ডগুলিতে ডেঙ্গির প্রকোপের বেশি আশঙ্কা রয়েছে, সেগুলি হল ১২, ১৩, ১৪, ১৫,, ১৬ এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ড। বিধান রোডে একটি নির্মীয়মান বহুতলে মশার আতুঁড়ঘর হয়েছে বলে অভিযোগ।

এই অবস্থায় আলাদাভাবে হলেও আসরে নেমেছেন ়গৌতম দেব ও অশোক ভট্টাচার্য। এ দিন সকালে পর্যটন মন্ত্রীর নির্দেশে বরো চেয়ারম্যান, পুর কমিশনার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড সহ কিছু এলাকায় গিয়ে মশার উৎস চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিয়েছেন। কিছুক্ষণ পরেই পুরসভার মেয়র পারিষদ মুকুল সেনগুপ্ত অফিসারদের নিয়ে এলাকায় গিয়ে মশার লার্ভা মারার কাজের তদারকি করেছেন। পর্যটন মন্ত্রী বলেন, ‘’১৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিশেষ নজর রাখছে বরো চেয়ারম্যান।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন