সাজ: রাসমেলার উৎসব প্রাঙ্গণ সেজে উঠছে। নিজস্ব চিত্র
যশোরের খেজুর গুড়, পদ্মার নোনা ইলিশ থেকে ঢাকার জামদানি শাড়ির পসরা নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এপার বাংলার শিল্পীদের সঙ্গে ওপার বাংলার শিল্পীদের সংগীতানুষ্ঠান আয়োজনের চেষ্টাও হচ্ছে। সব মিলিয়ে দু’শো বছরের বেশি প্রাচীন রাসমেলা ময়দান দুই বাংলার মিলন মঞ্চও হয়ে ওঠার অপেক্ষায়। মেলার দিন যত এগিয়ে আসছে কোচবিহারের বাসিন্দাদের মধ্যে ওই ব্যাপারে উন্মাদনাও তাই বাড়ছে। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ বলেন, “ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সামগ্রী নিয়ে বেশ কয়েকটি স্টলের জন্য জায়গা চেয়ে আবেদন এসেছে। মেলার সংগীতানুষ্ঠানেও সেদেশের শিল্পীদের নিয়ে আসার ব্যাপারে চেষ্টা হচ্ছে। কলকাতা, মুম্বইয়ের খ্যাতনামা শিল্পীদের অনুষ্ঠান সূচি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে।”
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, রাজাদের আমলে শুরু হওয়া কোচবিহারের রাসমেলার খ্যাতি রয়েছে প্রতিবেশী একাধিক দেশেও। সেই টানেই এ পার বাংলার ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মেলায় স্টল করছেন ও পার বাংলার ব্যবসায়ীরাও। এ বার বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের জন্য ১০টি স্টলের জায়গার আবেদন জমা হয়েছে। ওই সংখ্যা বাড়তে পারে এমন সম্ভবনা মাথায় রেখে কিছু স্টল দেরিতে বণ্টনের চিন্তাভাবনা হচ্ছে। কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণ মোদক বলেন, “রাসমেলা ছাড়া অন্য মেলায় সেভাবে দুই বাংলার ব্যবসায়ীদের মেলবন্ধনের সুযোগ হয় না। তাই ওই মেলা দুই বাংলার মিলনমেলাও।” তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সমস্ত সহযোগিতা করতে সমিতির সদস্যদের বলা হয়েছে।
উদ্যোক্তারা জানান, রাসমেলা উপলক্ষে সাংস্কৃতিক মঞ্চে প্রতিদিন স্থানীয় ও বহিরাগত শিল্পীদের অনুষ্ঠান হবে। তালিকায় জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, অদিতি মুন্সি, অশোক ভদ্র, রুপঙ্কর বাগচি, মেঘলা প্রমুখের নাম রয়েছে। থাকছে ভাওয়াইয়া অনুষ্ঠানের আয়োজনও।
কোচবিহারের প্রবীণ বাসিন্দারা জানান, দেশভাগের আগে মদনমোহন মন্দিরের এই রাসমেলা উপলক্ষে অবিভক্ত বাংলার বহু জায়গা থেকেই মানুষ আসতেন। তাঁদের কাছে এই উৎসব ছিল নিজেদের উৎসব। তবে তারপরে ভাটা পড়ে উৎসাহে।
পুরসভার এক কর্তা জানান, বাংলাদেশের শিল্পীদের আনতে যোগাযোগ হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে একজনের ব্যাপারে আলোচনা এগিয়েছিল। সেটা চূড়ান্ত হয়নি। বিকল্প দেখা হচ্ছে। তবে এপার বাংলায় বসে শীতের পিঠেপায়েসের জন্য খেজুর গুড়, জামদানি, নোনা ইলিশও কিন্তু বড় প্রাপ্তি।