রাত-পাহারা: হাতি থেকে বাঁচতে আলো। আমগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
এ বার খাবার নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি শুরু করল হাতির দল। গত দশদিন ধরে লাগাতার হাতির দল হামলা চালাচ্ছে ধূপগুড়ির গধেয়ারকুঠি, বগড়িবাড়ি, ময়নাগুড়ির দাসপাড়া ও ঝাড়ুয়াপাড়ার জলঢাকা নদীর চরে। বনদফতরও চরে হাতি ঢোকা বন্ধ করতে সদর্থক ভূমিকা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা। অনেকে বাড়ি ভেঙে নিয়ে চলে যাচ্ছেন অন্যত্র।
বাসিন্দারা জানান, সোমবার রাতে হাতির চিৎকার শুনে দূর থেকে দেখেন আনাজের জমিতে হাতিগুলি নিজেরাই মারামারি করছে। যা দেখে ভয় পেয়ে যান তাঁরা। প্রশান্ত রায় নামে এক বাসিন্দা বলেন, “দূর থেকে আলো আঁধারিতে হাতিদের মারামারি চিৎকার শুনতে পাই। মনে হয় আনাজের জমি দখল নিয়েই মারামারি শুরু করে ওরা। আমরাও আগুন জ্বালিয়ে চিৎকার করতে থাকি। কিছুক্ষণ মারামারি করার পর অবশ্য অন্যদিকে চলে যায়।”
নদীর চরে লাগাতার হাতিদের আনাগোনা নিয়ে চিন্তিত বনদফতরও। দু’দিকে নদী। মাঝখানে বিস্তীর্ণ চরের দুর্গম এলাকায়। তাই রাতে বনকর্মীরা হাতি তাড়াতে পারছে না। এই পরিস্থিতিতে দিনের আলোয় অভিজ্ঞ বনকর্মীদের দিয়ে এলাকাটির ভৌগলিক অবস্থান জেনে সন্ধে থেকে কুনকি হাতি নিয়ে হাতির দলকে জঙ্গল থেকে বের হওয়ার আগেই আটকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বনদফতর। গরুমারার রামসাই থেকে প্রতিদিন চরে চলে আসে হাতির দলটি।
গরুমারার সহকারী এডিএফও রাজু সরকার জানান, “জলঢাকার চরে হাতির সমস্যার সমাধান করা জরুরি হয়ে পড়েছে। একাধিক এলাকা থেকে সেখানে বনকর্মীদের পাঠিয়ে হাতি তাড়ানোর পথ খোঁজা হচ্ছে। কোন রাস্তা দিয়ে হাতিদের পাকাপাকিভাবে জঙ্গলে ফিরিয়ে দেওয়া যায় তার চেষ্টা চলছে। ”
জলঢাকা নদী চরে প্রায় চার-পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় কয়েকশো বাসিন্দা ২০-২৫ বছর ধরে বসবাস করছে। কৃষিকাজই তাদের পেশা। এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। সোমবার রাতেও কয়েকটি বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের পাশাপাশি করে বিঘের পর বিঘের জমির আনাজ পা দিয়ে পিষে, খেয়ে নষ্ট করেছে হাতির পাল। চরের ফসল নষ্ট করে নদী বাঁধ পেরিয়ে গ্রামের মূল বসতিতে ঢুকে পড়তে পারে হাতির পাল এমন আতঙ্কেই রাতের ঘুম গিয়েছে বাসিন্দাদের।