দত্তক নিয়ে গ্রামের ভোল পাল্টাতে চায় কলেজ

চিকিৎসক দিবসে নতুন একটা কিছু করার কথা ভেবেছিলেন মানবেশ প্রামাণিক। সেই মতো গত বছর একাই একটি গ্রাম দত্তক নিয়ে নেন মালদহের এই বিশিষ্ট চিকিৎসক। ভাবুক পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত মহিষবাথান গ্রামের এখন ভোল বদলে গিয়েছে।

Advertisement

জয়ন্ত সেন

মালদহ শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৭
Share:

দত্তক: এই গ্রামই দত্তক নেওয়া হবে। ছবি: মনোজ মুখোপাধ্যায়

চিকিৎসক দিবসে নতুন একটা কিছু করার কথা ভেবেছিলেন মানবেশ প্রামাণিক। সেই মতো গত বছর একাই একটি গ্রাম দত্তক নিয়ে নেন মালদহের এই বিশিষ্ট চিকিৎসক। ভাবুক পঞ্চায়েতের আদিবাসী অধ্যুষিত মহিষবাথান গ্রামের এখন ভোল বদলে গিয়েছে। এ বার সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী মাসের শুরুতেই ওই পঞ্চায়েতেরই আর এক আদিবাসী অধ্যুষিত খেড়িবাড়ি গ্রামটি দত্তক নিতে চলেছে মালদহ কলেজ।

Advertisement

বেশ কয়েক জন শিক্ষক ইতিমধ্যে গ্রামে গিয়ে সমীক্ষাও করে এসেছেন। এখন উন্নয়নের রূপরেখার একটি ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরি করছেন তাঁরা। যোগাযোগ করা হচ্ছে জেলা প্রশাসনের সঙ্গেও।

মালদহ জেলা সদর থেকে মহিষবাথান গ্রামটির দূরত্ব বড়জোর ১২ কিলোমিটার। নারায়ণপুর পেরিয়ে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে বাঁ দিকে কিছুটা গেলেই পড়বে গ্রামটি। মালদহ কলেজের সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ৬০টি আদিবাসী পরিবারের বাস সেখানে। জনসংখ্যা সব মিলিয়ে আড়াইশো হবে। তবে এত জনের পানীয় জলের উৎস বলতে একটি মাত্র সাব মার্সিবল পাম্প, যা কিছু দিন আগেই পঞ্চায়েত থেকে বসানো হয়েছে। অনেকে গ্রামের এক দিকে থাকা একটি সিল্ক কারখানা থেকে পানীয় জল সংগ্রহ করে আনেন।

Advertisement

৬০টি পরিবারের মধ্যে সাকুল্যে ২০-২৫টি পরিবারের বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে। পাশে একটি প্রাইমারি স্কুল থাকলেও গ্রামে স্কুলছুট হয়ে রয়েছে অনেক কচিকাঁচা। স্বাস্থ্য পরিষেবার কোনও বালাই নেই।

আর রাস্তা! কিছুটা মোরাম বিছোনো রাঙা মাটির পথ। বাকিটা কাঁচা। বিদ্যুৎ অবশ্য অনেকের বাড়িতে পৌঁছেছে। কিন্তু কোনও পথবাতি না থাকায় সন্ধে হতেই অন্ধকারে ডুবে যায় গোটা এলাকা।

মালদহ কলেজের অধ্যক্ষ উত্তম সরকার বলেন, ‘‘ন্যাশনাল অ্যাসেমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের (ন্যাক) ভাবনা হল কলেজকে সমাজের উন্নতিতেও এগিয়ে আসতে হবে। তাই খেড়িবাড়ি গ্রামটিকে দত্তক নিয়ে উন্নয়ন করতে চাইছি। কলেজের অধ্যাপক ও শিক্ষাকর্মীদের থেকে চাঁদা তুলেই পানীয় জল, শৌচাগার-সহ অন্য সমস্যার সমাধানের চেষ্টা হবে। জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদের সাহায্য নিয়ে কিছু করা যায় কি না সে চেষ্টাও করব।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি সরলা মুর্মু বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে কিংবা সংস্থা হিসেবে গ্রামের উন্নয়নে সামিল হলে সকলকেই স্বাগত জানাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন