ডেঙ্গির সমীক্ষা নিয়ে অভিযোগ

গত বছর ইংরেজবাজার শহরে ১৬৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বেসরকারি মতে অবশ্য আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। কেননা, বেসরকারি নার্সিংহোম বা প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবোরেটরিতে যে রোগীদের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল তাঁদের সংখ্যা এই পরিসংখ্যানে নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ১১ জুন ২০১৭ ১৩:০০
Share:

ডেঙ্গির অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগাম মাঠে নামতে উদ্যোগী হয়েছিল ইংরেজবাজার পুরসভা ও স্বাস্থ্য দফতর। ঠিক হয়েছিল, মে মাস থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা মাসে ১০ দিন বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা ও ডেঙ্গি প্রতিরোধে সচেতনতা প্রচার চালাবেন। কিন্তু সেই কাজ ঠিকঠাক হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

গত বছর ইংরেজবাজার শহরে ১৬৫ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বেসরকারি মতে অবশ্য আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেশি। কেননা, বেসরকারি নার্সিংহোম বা প্যাথোলজিক্যাল ল্যাবোরেটরিতে যে রোগীদের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছিল তাঁদের সংখ্যা এই পরিসংখ্যানে নেই। সেকারণে এ বার আগাম মাঠে নামার সিদ্ধান্ত হয়। ঠিক হয়, প্রতি মাসের ১ থেকে ৫ তারিখ ও ১৫ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত সমীক্ষা হবে। কিন্তু অনেক ওয়ার্ডের বহু বাড়িতেই স্বাস্থ্যকর্মীরা যাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বিশেষ করে বহুতলে তাঁদের দেখা মিলছে না। পুরসভারই একাধিক কাউন্সিলরের বক্তব্য, পুরো বিষয়টি নিয়ে তাঁদের কিছুই জানানো হয়নি। পুরপ্রধান নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘কেউ বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন না এমন অভিযোগ শুনিনি। আমরা সকলকেই যেতে নির্দেশ দিয়েছি। অভিযোগের বিষয়টি দেখা হবে।’’

মে মাসের ১০ দিন সমীক্ষা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, অনেক ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্যকর্মীরা বাড়ি বাড়ি যাননি। তাই সমীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুরসভার সিপিএম কাউন্সিলর দুলালনন্দন চাকি বলেন, ‘‘এমন কোনও সমীক্ষা হচ্ছে বলে আমাকে কেউ জানাননি। তাই আমার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে আদৌ সমীক্ষা চলছে কি না তাও জানা নেই।’’ পুরসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারির ক্ষোভ, ‘‘সমীক্ষা হচ্ছে নাম কা ওয়াস্তে।’’ শুধু বিরোধীরাই নন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর, তৃণমূলেরই প্রসেনজিৎ দাসও বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ডে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতার কাজ হচ্ছে বলে জানা নেই।’’

Advertisement

পুরসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিটি বাড়িতে ফর্ম নিয়ে গিয়ে পরিবারের যাবতীয় তথ্য নেওয়া, বাড়িতে কেউ জ্বরে আক্রান্ত কি না তা দেখা, বাড়িতে জমা জল রয়েছে কি না, থাকলে সেখানে লার্ভা রয়েছে কি না— সবই খতিয়ে দেখার কথা। ডেঙ্গি প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেটাও বোঝাবেন তাঁরা। কিন্তু বহুতলে তাঁদের না যাওয়ার অভিযোগ যে উঠেছে তা স্বীকার করেছেন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অ্যাসোসিয়েট সদস্য গায়ত্রী ঘোষ বলেন, ‘‘নিরাপত্তারক্ষীরা বহুতলগুলিতে স্বাস্থ্যকর্মীদের সমীক্ষার কাজ চালাতে সমস্যা সৃষ্টি করছেন এটা আমরা দেখছি।’’ এ দিকে পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলর শুভময় বসু বলেন, ‘‘প্রতিটি বাড়িতেই সমীক্ষা করার কথা, এমনকী বহুতলেও। এ নিয়ে কোথাও কোনও অভিযোগ পেলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন