— ফাইল চিত্র।
এক নাবালিকাকে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তের কড়া শাস্তির দাবি জানাতে থানায় গিয়ে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ উঠল তৃণমূলের একাংশ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের এনজেপি থানা চত্বরের ঘটনা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ডাবগ্রাম ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান নির্মল বর্মণের নেতৃত্বে ২৫-৩০ জন তৃণমূল কর্মী রাত ১১টার পরে থানায় যান। ঠাকুরনগরের এক নাবালিকাকে দর্ষণের ঘটনায় তাঁরা অভিযুক্ত যুবকের কড়া শাস্তির দাবি তোলেন। নির্মলবাবু-সহ কয়েক জন থানার ওসি-র সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন। সেই সময় ৫-৬ জন যুবক ‘বন্দে মাতরম’ স্লোগান দিতে শুরু করেন। পুলিশ কর্মীরা তাঁদের রাতে থানায় মধ্যে চিৎকার চেঁচামেচি করতে নিষেধ করেন। তা না শুনে উল্টে ওই কর্মীরা অভব্যতা শুরু করেন বলে অভিযোগ। পুলিশকর্মীদের ধাক্কাধাক্কি করে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।
উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা থানা চত্বরে। পুলিশ কর্মীরা দফতর, ব্যারাক থেকে বার হয়ে আসেন। এর পরে লাঠি উঁচিয়ে সকলকে তাড়া করে থানা থেকে বার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ লাঠিচার্জ বা তাড়া করার ঘটনা মানতে চায়নি।
কমিশনারেটের অফিসারেরা জানিয়েছেন, গোলমালের সময় বিভিন্ন মহলে টেলিফোন যায়। তার পরে ওই নেতা-কর্মীরা থানা থেকে চলে যান। মঙ্গলবার সকালে নির্মলবাবু-সহ ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক এনজেপি থানায় যান। ওসি-সহ অফিসারদের সঙ্গে আলোচনার পরে ঘটনার জন্য তাঁদের কয়েক জন রাতের ঘটনার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন। পুলিশ মামলা না করলেও গোটা ঘটনাটি লিপিবদ্ধ করে রেখেছে।
দুপুরের পর থেকে অবশ্য কোনও পক্ষই বিষয়টি নিয়ে বিশেষ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শাসক দলের এলাকার ব্লক সভাপতি দেবাশিসবাবু বলেন, ‘‘একটি মামলা নিয়ে খোঁজখবর করতে আমাদের লোকজন থানায় গিয়েছিলেন। ওসির ঘরে আলোচনার সময় বাইরে কয়েকজন বিশৃঙ্খল আচরণ করেছেন বলে শুনেছি। তাদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।’’
আর শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ভরলাল মিনা বলেছেন, ‘‘এমন কোনও কিছু জানা নেই।’’ উপ-প্রধান নির্মলবাবুও কিছু বলেননি।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত ২২ অগস্ট ঠাকুরনগরের এক নাবালিকা নিখোঁজ হয়। তার পরিবারের তরফে এক যুবকের নামে অপহরণের মামলা দায়ের হয়। পরে যুবকের বাড়ি থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। ছেলেটি গ্রেফতার হয়। কিন্তু মেয়েটি ছেলেটির সঙ্গে থাকবে বলেও জানান। এর পরে গত ১৬ অগস্ট মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে তার বাবা ফের থানায় অভিযোগ জানান। গত সোমবারই জলপাইগুড়ি আদালতে সব জানিয়ে পকসো ধারায় মামলা করে মেয়েটির মেডিক্যাল টেস্টের প্রস্তুতি নেয় পুলিশ। রাতেই জামিনে থাকা অভিযুক্তকে ফের গ্রেফতার করার দাবি নিয়ে থানায় হাজির হন তৃণমূলের নেতা কর্মীরা।
এনজেপি থানার এক সাব ইন্সপেক্টর, থানার এক সেন্ট্রির দায়িত্বে থাকা কনস্টেবল এবং সাদা পোশাকের এক কনস্টেবলকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।
থানার ওসি থেকে পুলিশ কর্মীরা সবাই অবশ্য সকাল থেকেই প্রকাশ্যে মুকুল কুলুপ। মেয়েটির অবশ্য এদিন মেডিক্যাল টেস্ট করানো হয়েছে।