পুনর্বাসন নিয়ে দুর্নীতির নালিশ

চ্যাংরাবান্ধার পানিশালার তারার বাড়ি এলাকায় মেখলিগঞ্জের ভোটবাড়ি ক্যাম্পের বাসিন্দাদের জন্য বারো বিঘা জমি কেনা হয়। প্রতি বিঘা জমি ১১ লক্ষ টাকা করে কেনা হয়েছে। সবমিলিয়ে জমির দাম পড়েছে প্রায় এক কোটি ৩২ লক্ষ।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

মেখলিগঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৭ ০১:৫৮
Share:

প্রতীকী ছবি

সাবেক ছিটমহলের ক্যাম্পের বাসিন্দাদের স্থায়ী পুনর্বাসনের জন্য জমি কেনায় প্রায় এক কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল।

Advertisement

চ্যাংরাবান্ধার পানিশালার তারার বাড়ি এলাকায় মেখলিগঞ্জের ভোটবাড়ি ক্যাম্পের বাসিন্দাদের জন্য বারো বিঘা জমি কেনা হয়। প্রতি বিঘা জমি ১১ লক্ষ টাকা করে কেনা হয়েছে। সবমিলিয়ে জমির দাম পড়েছে প্রায় এক কোটি ৩২ লক্ষ। অথচ ওই এলাকায় জমির দাম বিঘা প্রতি দুই থেকে তিন লক্ষ টাকা। খুব বেশি হলে ওই জমির দাম সব মিলিয়ে ৩৩ লক্ষ টাকা হওয়ার কথা বলে বাসিন্দাদের দাবি। তাঁদের অভিযোগ, ওই জমি খুবই প্রত্যন্ত এলাকায়। ধরলা নদীর ধারে। চা বাগান তুলে দিয়ে সেখানে ভবন তৈরি করা হচ্ছে। ওই জায়গায় পুনর্বাসন নিয়ে আপত্তি তুলে গত চার দিন ধরে মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে অনশন করছেন তাঁরা। প্রশাসনের আশ্বাস শনিবার দুপুরে তাঁরা অনশন তুলে নেন। শুক্রবার ওই অনশনকারীদের উপরে লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে বিজেপি ও বামেরা শনিবার সকাল ৬ টা থেকে ১২ ঘণ্টার মেখলিগঞ্জ শহর বন্‌ধ পালন করে।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে ওই ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “আপাতত ওই এলাকায় নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের কাছেপিঠে পুনর্বাসন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। সেখানে জমির দাম আমার জানা নেই। এমন কোনও অভিযোগ থাকলে প্রশাসন খতিয়ে দেখবে।” কোচবিহারের জেলাশাসক কৌশিক সাহা বলেন, “ওই বিষয়ে আমকে কেউ লিখিত অভিযোগ জানালে তা তদন্ত করে দেখা হবে।” মেখলিগঞ্জের বিধায়ক অর্ঘ্যরায় প্রধান জানান, ওই জমি কেনার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তিনি বলেন, “ওই ক্যাম্পের বাসিন্দারা তারার বাড়ি এলাকায় যেতে চাইছেন না। এর প্রতিবাদেই অনশনে বসেছিলেন তারা। এখন প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অনশন তুলেও নিয়েছেন। বাম ও বিজেপি তাঁদের উসকানোর চেষ্টা করছে।’’

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, ছিটমহল বিনিময়ের পর প্রায় দু’বছর হতে চলল। ওই বাসিন্দারাও এ পারে এসেছেন দেড় বছর হল। সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার বাসিন্দা বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে ঘেরা ভারতীয় ছিটমহল থেকে এ পারে এসেছেন। তাঁদের থাকার জন্য দিনহাটা, মেখলিগঞ্জ এবং হলদিবাড়িতে তিনটি অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি হয়। ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত বর্তমানে বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত অভিযোগ করেন, অস্থায়ী পুনর্বাসন তৈরি থেকেই দুর্নীতির শুরু। সে সময় ২৫০ টি টিনের ঘর তৈরির খরচ দেখানো হয় ৭০ কোটি টাকা। দীপ্তিমানবাবুর অভিযোগ, “পানিশালার জমি কেনাতে কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। রাস্তা তৈরি নিয়েও বিস্তর অভিযোগ। একজন ইঞ্জিনিয়র আগে যেখানে কর্মরত ছিলেন, সেখানকার বাছাই কিছু ঠিকাদার কেন কোচবিহারের ছিটমহলে বহু কোটি টাকার কাজ পাচ্ছেন সেটা নিয়েও লেনদেনের অভিযোগ শুনছি। আমরা ভিজিল্যান্স তদন্তের দাবিতে চিঠি দিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন