এনআরসি আতঙ্কে ছোটাছুটি

কেউ মহকুমা অফিস, কেউ বিডিও অফিস আবার কেউ অঞ্চল অফিসেও গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। এই অবস্থায় ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজ নিয়ে নোটিস দিল কোচবিহার মহকুমা প্রশাসন।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:২৮
Share:

ফাইল চিত্র।

এনআরসি আতঙ্কে ভুগছেন বাসিন্দারা। কেউ নথি জোগাড় করতে কলকাতা ছুটছেন। কেউ কেউ আবার ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজকেই ধরে নিয়েছেন এনআরসি-র প্রথম ধাপ। কেউ মহকুমা অফিস, কেউ বিডিও অফিস আবার কেউ অঞ্চল অফিসেও গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। এই অবস্থায় ভোটার তালিকা যাচাইয়ের কাজ নিয়ে নোটিস দিল কোচবিহার মহকুমা প্রশাসন। সেখানে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, “এখানে শুধু ভোটার কার্ডের মাধ্যমে তথ্য যাচাইয়ের কাজ হচ্ছে। কোনওরকম এনআরসি বা আধার কার্ডের সঙ্গে ভোটার কার্ডের সংযুক্তকরণের কাজ হচ্ছে না।” কোচবিহারের সদর মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “ভোটার কার্ডের কাজের বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্যই নোটিস দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

অসম লাগোয়া কোচবিহার। দুই এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে কোচবিহারের হাজার হাজার মেয়ের অসমে বিয়ে হয়েছে। এ ছাড়া রাজবংশী সম্প্রদায়ের বহু মানুষের বসবাস রয়েছে অসমে। অসমের নাগরিকপঞ্জি প্রকাশ হওয়ার পরে তাই ধাক্কা লেগেছে কোচবিহারেও। জেলার যে মেয়েদের অসমে বিয়ে হয়েছে তাঁদের একটি বড় অংশের নাম নেই নাগরিকপঞ্জিতে। সঠিক নথিপত্র জমা দেওয়ার পরে নাগরিকপঞ্জিতে নাম না থাকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
সেই সঙ্গে ভুমিপুত্রদের নাম বাদ নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এই অবস্থায় কোচবিহারের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যুবলিগের রাজ্য সম্পাদক আব্দুর রউফ নাজিরহাটের বাসিন্দা। তিনি বলেন, “সবাই পুরনো নথি খুঁজতে শুরু করেছে। যারা পাচ্ছেন না তাঁরা আতঙ্কে পড়েছেন। আমরা সে কথাই গ্রামে গ্রামে গিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করছি।”

কোচবিহারের প্রাক্তন সাংসদ তথা তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্য়করী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় অভিযোগ করেন, ভূমিপুত্র তথা রাজবংশী সম্প্রদায়ের একটি অংশের মানুষ উদ্বিগ্ন। অনেকের হাতেই পুরনো নথি নেই। কোচবিহারে প্রশাসনিক রেকর্ড রুম ১৯৭৪ সালে পুড়ে যায়। সে কারণে জেলা শহর থেকেও নথি সংগ্রহ সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “একটা সময় জমিদার বা জোতদারদের অধীনে শত শত বিঘে জমি ছিল। সেই জমিতে হাল দেওয়ার কাজ করতেন বহু মানুষ। অনেকেরই নিজস্ব জমি ছিল না। পরে ১৯৭৭ সালে ভূমি সংস্কার হলে তখন পরিস্থিতি পাল্টায়। সেই মানুষগুলি জমির কাগজ পাবেন কী করে?”

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন