বিধানসভা ভোটে জিতেছেন। পুরভোটের বেলাতেও এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ মোহিত সেনগুপ্ত। তাই রায়গঞ্জে ঠিক সময় ভোট করাতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, এই পুরসভায় তৃণমূলের জেতার আশা নেই দেখে রাজ্য সরকার প্রশাসক বসানোর পথে হাঁটতে চাইছে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ২২ জুলাই কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, কোনও পুরসভার মেয়াদ শেষের অন্তত এক মাস আগে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে রাজ্য সরকারকে ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। রায়গঞ্জের ক্ষেত্রে মেরেকেটে তিন সপ্তাহ বাকি। এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি রাজ্য সরকার। পুরসভার আসন পুনর্বিন্যাসের পদ্ধতির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছে তৃণমূল। রাজ্য প্রশাসনের যুক্তি, মামলার শুনানি না হলে তারা বিজ্ঞপ্তি জারি করবে না। এই অবস্থায় পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে রাজ্য রায়গঞ্জে প্রশাসক নিয়োগ করতে পারে বলে আশঙ্কা জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের। তাঁদের বক্তব্য, এর আগেও একাধিক পুরসভার ক্ষেত্রে প্রশাসক নিয়োগ করে দীর্ঘদিন কাজ চালানো হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের নামে শাসককে সময় কেনার সুযোগ করে দেয় রাজ্য। এখানে যাতে এমন না হয়, সে জন্য মঙ্গলবারই হাইকোর্টে পাল্টা মামলা করেছেন মোহিতবাবু। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল সরকারি ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে রায়গঞ্জে ঘর গোছাতে চাইছে। সেটা আটকে ঠিক সময়ে নির্বাচন করার লক্ষ্য নিয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি।’’ রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে মোহিতবাবুই ছিলেন জোটের প্রার্থী। এবং রায়গঞ্জ পুর এলাকায় তৃণমূল প্রার্থীর তুলনায় তাঁর ‘লিড’ ছিল ২১ হাজারের কিছু বেশি। বাম এবং কংগ্রেস, দু’দলের নেতারাই বলছেন, স্বাভাবিক ভাবেই এই মুহূর্তে এখানে তৃণমূলের দাঁত ফোঁটানোর বিশেষ ক্ষমতা নেই। কিন্তু এই জেলায় একা লড়ে শাসকদল নয়ের মধ্যে চারটি আসন দখল করেছে। ফলে সময় পেলে তারা সমীকরণ বদলে দিতেই পারে। কংগ্রেসের দাবি, সেই সময়টাই এখন জোগাড় করতে চাইছে তৃণমূল।
বিরোধী হাতে থাকা পুরসভা মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে প্রশাসক বসিয়ে নিজেদের কব্জায় নিয়ে আসার ঐতিহ্য অবশ্য নতুন নয়। বাম আমলেও এমন ঘটনা অনেক জায়গায় ঘটেছে। একই ভাবে ঘটেছে তৃণমূল আমলেও। কোথাও প্রশাসন যুক্তি দিয়েছে, একাধিক পুরসভা যুক্ত করে নতুন করে ভোটের। যেমন, বিধাননগর ও রাজারহাট-গোপালপুর পুরসভা জুড়ে দেওয়া। তখন তৃণমূলের সঙ্গে সমানে সমানে শক্তিশালী ছিল বিজেপি। কিন্তু হাতে কিছুটা সময় পাওয়ায় তৃণমূল ফের নিজেদের জোর ফিরে পায়।