উত্তরে পুরভোট: রায়গঞ্জ

রায়গঞ্জে ভোটের মুখে ফের ভাঙন কংগ্রেসে

কলকাতায় এসে শহরের প্রাণকেন্দ্র ময়দানের এক কোণে সন্ধের অন্ধকারে তৃণমূলে যোগ দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ বিশ্বাস। কখনও বড় সভামঞ্চে শাসকদলে যোগ দিয়েছেন বিপক্ষের নেতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৭
Share:

দলবদল: তৃণমূল বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে সন্দীপ বিশ্বাস। সোমবার কলকাতায়। ছবি: সুদীপ ঘোষ

কলকাতায় এসে শহরের প্রাণকেন্দ্র ময়দানের এক কোণে সন্ধের অন্ধকারে তৃণমূলে যোগ দিলেন উত্তর দিনাজপুর জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সন্দীপ বিশ্বাস।

Advertisement

কখনও বড় সভামঞ্চে শাসকদলে যোগ দিয়েছেন বিপক্ষের নেতা। নিদেনপক্ষে তৃণমূল ভবনের কয়েকশো ওয়াটের আলোর নিচে। কিন্তু সন্দীপবাবুর দল বদলের মুহূর্তে আলো বলতে কেবল ছিল সংবাদমাধ্যমের আলোকচিত্রীদের ক্যামেরার ফ্ল্যাশ। সেখানে উপস্থিত ছিলেন উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।

জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্তের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সন্দীপবাবু জেলায় দলের ‘সেকেন্ড ম্যান’ বলেই পরিচিত। গত শনিবার মোহিতবাবু ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেস প্রার্থী হিসেবে সন্দীপবাবুর নামও ঘোষণা করেন। শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘এ বারও সন্দীপবাবুকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নে সামিল হতেই সেই মনোনয়ন প্রত্যাখ্যান করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তিনি।’’ ওই ওয়ার্ডেই তাঁকে প্রার্থী করা হবে বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দুবাবু। আর মোহিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘সন্দীপবাবু তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বলে শুনেছি। বিস্তারিত না জেনে মন্তব্য করব না।’’

Advertisement

তবে জেলা কংগ্রেসের একটা অংশের বক্তব্য, তৃণমূলের সন্ত্রাসে কোনওভাবেই ওই ওয়ার্ডে তিনি এ বার জিততে পারবেন না আশঙ্কা করেই দল ছেড়েছেন সন্দীপবাবু। তবে সেই বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে শুভেন্দুবাবুর সুরেই সন্দীপবাবু দাবি করেন ‘‘উন্নয়নের নামে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। সত্যিকারের উন্নয়নের স্বার্থেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’

২০০১ সালে ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পুরসভা নির্বাচনে প্রথম বার জয়ী হয়ে কাউন্সিলর হন সন্দীপবাবু। ২০০৬ সালে ওই ওয়ার্ডটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তাঁর স্ত্রী অনিমিতাদেবী কংগ্রেসের টিকিটে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। ২০১১ সালে ফের ওই ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন সন্দীপবাবু। এ ছাড়াও ২০০১ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি ও ২০১১ সাল থেকে জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বেও ছিলেন সন্দীপবাবু।

গত এক মাসে জেলা যুব কংগ্রেসের সহকারী সভাপতি মানস ঘোষ, দলের বিদায়ী কাউন্সিলর নয়ন দাস, সাধন বর্মন, রায়গঞ্জ শহর যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিত সাহা, রায়গঞ্জ ব্লক মাইনরিটি সেলের সভাপতি আলতাব হোসেন, রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি মৌসুমী সিংহ, প্রাক্তন সভাপতি বরেন্দ্রনাথ রায় সহ কংগ্রেসের জনা ৫০ নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।

জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের বক্তব্য, ‘‘সন্দীপবাবুর মতো একজন পোড় খাওয়া নেতা তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় দল আরও শক্তিশালী হল। দল তাঁকেই ২৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করবে। ওই ওয়ার্ডের ঘোষিত তৃণমূল প্রার্থী তপন নাগকে অন্য ওয়ার্ড থেকে টিকিট দেওয়া হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন