ডিজিট্যাল কার্ড নিয়ে বিভ্রান্তি, ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা

ডিজিট্যাল রেশন কার্ড বিলি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। ঘোষণা শুনে নির্দিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানোর আধ ঘণ্টা পর কেউ এক ঘণ্টা পর জানতে পারছেন তাঁর নাম নেই ওই রেশন কার্ড বিলির তালিকায়। গত শনিবার রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কোচবিহারে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড চালু করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০১:৩০
Share:

ডিজিট্যাল রেশন কার্ড বিলি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বাসিন্দাদের মধ্যে। ঘোষণা শুনে নির্দিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে লাইনে দাঁড়ানোর আধ ঘণ্টা পর কেউ এক ঘণ্টা পর জানতে পারছেন তাঁর নাম নেই ওই রেশন কার্ড বিলির তালিকায়। গত শনিবার রাজ্যের খাদ্য ও সরবরাহ মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক কোচবিহারে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড চালু করেছেন। তিনি পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকও করেছেন। ওই দিন থেকেই কোচবিহার ১ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড বিলি শুরু করা হয়। কোচবিহার জেলা খাদ্য ও সরবরাহ আধিকারিক মানিক সরকার বলেন, “ন্যাশনাল ফুড সিকিউরিটি অ্যাক্ট (এনএফএসএ) বেনিফিশিয়ারি তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাঁরা ওই কার্ড পাবেন। এমন ১৯ লক্ষ বাসিন্দাকে ওই কার্ড দেওয়া হবে। কার্ড বিলি শুরু হয়েছে। তালিকায় নাম থাকা সবাই কার্ড পাবেন। যাদের নাম তালিকায় নেই তাঁরা পাবেন না।”

Advertisement

খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর, কোচবিহারে প্রায় ৩০ লক্ষ রেশন কার্ড রয়েছে। মাস ছয়েক আগে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়ে রেশন দোকানগুলিতে ক্যাম্প করা হয়। সেখানে রেশন কার্ড জমা রেখে নাম নেওয়া হয়। পরে অবশ্য রেশন কার্ড জমা নেওয়া হয়। শুক্রবার থেকে কোচবিহার ১ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড বিলির কথা ঘোষণা করা হয়। সে জন্য নির্দিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতে অফিসে যোগাযোগ করতে হয় বলা হয় বাসিন্দাদের। শনিবার সকাল থেকেই ভিড় উপচে পড়ে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে। বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর কেউ কার্ড নিয়ে বাড়ি ফেরেন। কারও নাম তালিকায় নেই জেনে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হয়। ঘুঘুমারির বাসিন্দা রঞ্জিত বর্মন বলেন, “বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর জানতে পারি আমার মায়ের নামে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড হয়েছে। বাকি পরিবারের অন্য সদস্যদের হয়নি।” আরেক বাসিন্দা সঞ্জীব রাজভর বলেন, “গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে গিয়ে জানতে পারি তলিকায় আমাদের নাম নেই।”

এমনই বহু বাসিন্দা অভিযোগ করেন, কাদের নাম তালিকায় থাকবে তা আগাম কেন জানানো হল না। বা কোন ভিত্তিতে নাম তালিকায় রাখা হচ্ছে তা জানালেও সাধারণ মানুষকে অযথা হয়রানির মধ্যে পড়তে হত না। কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা কার্ড পাব কি না তা নিয়ে এখনও কেউ স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারছে না।”

Advertisement

দফতর সূত্রের খবর, কোচবিহারে ৩০ লক্ষ গ্রাহকের মধ্যে ১৯ লক্ষ গ্রাহককে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড দেওয়া হবে। যে সমস্ত বাসিন্দারা অপেক্ষাকৃত গরিব তাঁদের নাম ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের তালিকায় রয়েছে। তিনটি স্তরে ওই কার্ড ভাগ করা হয়েছে। প্রথম স্তরে অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনা (এএওয়াই) একদম গরিব যারা তাঁদের নাম রাখা হয়েছে। ওই তালিকায় নাম থাকা পরিবার পিছু মাসে ৩৫ কেজি করে চাল ও গম পাবেন। এ ছাড়াও রয়েছে পিএইচএইচ এবং এসপিএইচএইচ। ওই দুই তালিকায় নাম থাকারা এক জন পিছু মাসে ৫ কেজি করে চাল এবং গম পাবে। দফতরের কর্তারা জানান, ডিজিট্যাল কার্ড চালু করা হলেও সাধারণ রেশন কার্ড বাতিল করা হচ্ছে না। ওই কার্ডের মাধ্যমে যে ভাবে কেরোসিন তেল এবং চিনি গ্রাহকেরা পাচ্ছিলেন তেমনটাই পাবেন। খাদ্য সরবরাহ দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, চেন্নাইয়ের একটি সংস্থা এটিএম কার্ডের আদলে ডিজিট্যাল রেশন কার্ড তৈরি করছেন। তাঁরা ওই কার্ড সরবরাহের কাজ শুরু করেছেন। চলতি মাসেই সমস্ত গ্রাহকের হাতে কার্ড তুলে দেওয়া সম্ভব হবে বলে তাঁরা মনে করছেন। আগামী ১ জুন থেকে ডিজিট্যাল রেশন কার্ডের মাধ্যমে চাল, গম পাবেন গ্রাহকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন