রানওয়েতে বসে বিমান, রোজ ক্ষতি ৭০ হাজার

গত শনিবার ওই বিমানে সাংসদের সঙ্গে কোচবিহারে আসেন সংস্থার ডিরেক্টর দীপক ছেত্রী।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৯ ০৪:৪১
Share:

কোচবিহার বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সেই বিমান। —ফাইল চিত্র

ঠিক কী করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না ওঁরা। কখনও বিমানবন্দরে গিয়ে দেখে আসছেন, বিমানটি ঠিক আছে কি না। কখনও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দফতরে যাচ্ছেন। আর মাঝে মাঝে হিসেব কষছেন, কত টাকা লোকসান হল। শনিবার যে বিমানটি নিয়ে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক এসে নেমেছিলেন কোচবিহারে, সেই উড়ান সংস্থার কর্তাদের এখন এমনই অবস্থা। মঙ্গলবার বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে ওই সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অভিজিৎ মজুমদার জানান, বিমান বসিয়ে রাখায় রোজ প্রায় ৭০ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছে। নিরাপত্তা ছাড়া এমন ভাবে বিমান রেখে দেওয়া নিয়েও চিন্তায় আছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “আমরা এলাকার মানুষের কথা ভেবেই উড়ান চালানোর সিদ্ধান্ত নিই। ২৫ লক্ষেরও বেশি টাকা লগ্নি করতে হয়েছে। এখন এমন অবস্থা, বিমান উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারছি না।”

Advertisement

গত শনিবার ওই বিমানে সাংসদের সঙ্গে কোচবিহারে আসেন সংস্থার ডিরেক্টর দীপক ছেত্রী। তিনি জানান, তাঁদের দু’জন বিমানচালক এবং এক জন টেকনিশিয়ান কোচবিহারেই রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ নিয়ম ও আইন মেনেই বিমান কোচবিহারে নিয়ে এসেছি। তার পরে এমনটা হবে, ভাবতে পারছি না।” এর মধ্যে নিরাপত্তার সমস্যা মেটাতে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী সরবরাহকারী সংস্থার কর্মীদের বিমানবন্দর পাহারার কাছে লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ দিন আরও ১৭ জন বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে বন্দুকধারী কর্মীরাও থাকবেন। এয়ারপোর্ট অথরিটি অব ইন্ডিয়া বা এএআই-এর কোচবিহার বিমানবন্দরের ডিরেক্টর বিপ্লব মণ্ডল বলেন, “ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এই মুহূর্তে বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ করা হয়েছে। খুব দ্রুত তাঁরা দায়িত্ব নেবেন।”

কোচবিহার বিমানবন্দরের এমন আচমকা অচল হয়ে যাওয়ার জন্য আগেই নিশীথ দায়ী করেছিলেন রাজ্য সরকারকে। এ দিন বিজেপি’র রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্যের বিরুদ্ধেই তোপ দাগেন। তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়েই রাজ্য কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে নিরাপত্তারক্ষী ও দমকল পরিষেবা তুলে নিয়েছে। তিনি বলেন, “এই বিমানবন্দরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চারদিকে আন্তর্জাতিক সীমান্ত। নাশকতা আশঙ্কাও রয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। দু-একদিন দেখে আমরা আন্দোলন শুরু করব।” তৃণমূল ওই ঘটনার জন্য বিজেপিকেই দায়ী করছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ বলেন, “ওই বিষয়ে রাজ্য সরকার কিছুই জানত না। জানানো হয়নি। তাই এই নিয়ে বিজেপির কোনও বক্তব্যের মানে হয় না।”

Advertisement

গত শনিবার দুপুরে একটি ৯ আসনের বিমান নিয়ে কোচবিহারে নামেন সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। সেখানেই তিনি ঘোষণা করেন, ১ অগস্ট থেকে কোচবিহার থেকে বিমান পরিষেবা চালু হবে। কোচবিহার থেকে বাগডোগরা ও গুয়াহাটি পর্য়ন্ত বিমান চলাচল করবে। ওই ঘোষণার পরে রাতে কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে নিরাপত্তারক্ষী ও দমকল পরিষেবা তুলে নেয় রাজ্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন