ফুলপাকড়ি ধানের স্বীকৃতি চায় কোচবিহার

কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের কৃষি আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোচবিহারের ধানের নিজস্ব জাত ফুলপাপড়ি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৬
Share:

দেশি ধানের বাজারে কোচবিহারের নাম সবসময়ই থাকে। সে তা ‘কালাভাত’ হোক বা ‘গোবিন্দ ভোগ’। সে সব বাদেই কোচবিহার তার তার নিজস্ব উৎপাদিত ধান নিয়েও বাজার মাতিয়েছে একসময়। তার মধ্যে এক নম্বর ‘ফুলপাপড়ি’। যা বর্তমানে ‘ফুলপাকড়ি’ নামে পরিচিত।

Advertisement

এখনও কোচবিহারে কয়েকশো একর জমিতে ওই ধান চাষ হয়। শুধু দেখতেই নয়, স্বাদে ও গন্ধে ওই ধান টেক্কা দিতে পারে যে কাউকেই। এবারে ওই ধানের জিআই পেটেন্টের দাবিতে সরব হয়েছেন কৃষক থেকে কৃষি আধিকারিকরা সকলেই। তাঁদের বক্তব্য, “কারও সঙ্গে তুলনায় যেতে চাই না। তুলনায় ওই ধান আলাদা। তা জিআই পেটেন্ট পেলে কোচবিহারে ওই ধানের উৎপাদন যেমন বাড়বে, বাড়বে বিক্রি।”

কোচবিহার ১ নম্বর ব্লকের কৃষি আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কোচবিহারের ধানের নিজস্ব জাত ফুলপাপড়ি। এই ধান জিআই পেটেন্ট পেলে বাণিজ্যকরণে সুবিধে হবে। কৃষকরাও সঠিক মূল্য পাবে।” পাশাপাশি তিনি জানান, শুধু ওই চাল নয়, দেশি জাতের ধান ‘বিটল’ কোচবিহারের নিজস্ব। গোল আলু এবং বাদামী আলুও কোচবিহারের নিজস্ব। সেই সবেরও জিআই পেটেন্ট পাওয়া উচিত বলেন মনে করেন অনেকে। ঘুঘুমারি এলাকার কৃষক নন্দ বর্মন বলেন, “দেশি জাতের ধান চাষ আমরা এখন অল্প জমিতেই করি। শুধু বাড়িতে খাওয়ার জন্য। ফুলপাকড়ি ধান খুবই ভাল। খেতে যেমন ভাল তেমনি দেখতেও। সঠিক মূল্য পেলে তা বেশি পরিমানে চাষ করব।”

Advertisement

কৃষি দফতর সূত্রের খবর, রাজ আমল থেকে কোচবিহারে ‘ফুলপাপড়ি’ ধানের কদর। বাজারে তখন প্রচুর পরিমাণে মিলত ওই ধান। নিজের গুণেই ওই ধান বিক্রি হত। এ ছাড়া ওই ধান দেখতে অনেকটা ফুলের পাপড়ির মতো। তাই ধানের নাম দেওয়া হয় ‘ফুলপাপড়ি’। পরবর্তীতে বর্ণ বিপর্য়য়ে তা পাকড়ি হয়ে যায়। এখন প্রত্যেকেই ‘ফুলপাকড়ি’ বলেই চেনে। কৃষি আধিকারিকরা জানান, একসময় কোচবিহারে দেশি জাতের ধানের রমরমা ছিল। বিশেষ করে বাড়িতে খাওয়ার জন্যে অধিকাংশ বাসিন্দা ওই ধানের চাল ব্যবহার করতেন। কিন্তু দেশি ধানের ফলন কম ছিল। সেখানে বাইরের সঙ্কর প্রজাতির ধান ঢুকে যাওয়ায় ক্রমশ দেশি ধানের চাষ কমে যেতে থাকে। অতিরিক্ত আয়ের দিকে ঝুঁকে চাষিরা অন্য প্রজাতির চাষ শুরু করে। তাতে অবশ্য অতিরিক্ত সার, কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় চাষিদের। ফলে জমির উর্বরতা কমে যায়।

এই পরিস্থিতিতে আবার ফিরতে শুরু করেছে দেশি ধান। নতুন প্রযুক্তিতে ধানের উৎপাদন যেমন বেড়েছে তেমনই সার ও কীটনাশক তেমন ভাবে ব্যবহার করতে হচ্ছে না। এক আধিকারিকের কথায়, “ফুলপাপড়ির উৎপাদন এখন দিনে দিনে বাড়ছে। এই আবহাওয়ায় এমন ধানের চাল সহজেই উৎপাদন হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন