কোথাও সপরিবার ‘জীবন্ত’ দুর্গার সঙ্গে থাকছে মৃন্ময়ী মূর্তি। কোথাও আবার কুমোরটুলির শিল্পীর গড়া প্রতিমার পাশে থাকছে ধাতব দুর্গা মূর্তি। কোথাও আবার মাটির প্রতিমার সঙ্গে পাটকাঠি, চট, ধানের তুষের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি প্রতিমা রেখেছেন উদ্যোক্তারা। দু’টি মাটির প্রতিমাও রাখা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এ বার পুজোয় বাজিমাত করতে জোড়া দুর্গাকে হাতিয়ার করছেন কোচবিহার জেলার একাধিক পুজো উদ্যোক্তা। মণ্ডপ সজ্জা, আলোকসজ্জার পাশাপাশি রীতিমত জমজমাট জোড়া দূর্গার লড়াই।
কোচবিহারের তুফানগঞ্জ নিউটাউন নববিচিত্রা সংস্থার মণ্ডপে গেলেই দর্শণার্থীরা এ বার ‘জীবন্ত’ দুর্গার দর্শন পাবেন। উদ্যোক্তারা জানান, নজরকাড়া দু’টি মণ্ডপের একটিতে সপরিবার জীবন্ত দুর্গা দর্শন করবেন দর্শনার্থীরা। অন্যটিতে মৃণ্ময়ী প্রতিমা। ওই প্রতিমাতেই হবে পুজো, যাবতীয় নিয়ম পালন। দর্শণার্থীদের নজর কাড়তে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার প্রতিনিধিরা যেখানে সপ্তমী থেকে নবমী দৈনিক সন্ধ্যা থেকে প্রদর্শনী করবেন। উদ্যোক্তাদের দাবি, তুফানগঞ্জে এমন আয়োজন এবারই প্রথম। ওই পুজো কমিটির কর্তা নবকুমার সাহা বলেন, “অনেক রাত পর্যন্ত জীবন্ত দুর্গার প্রদর্শনী দেখার সুযোগ মিলবে। তবে মাঝেমধ্যে বিরতি রাখতে হবে শিল্পীদের বিশ্রামের জন্য। তখন ওই মণ্ডপে পর্দা নামবে।”
কোচবিহার শহরের হাজরাপাড়া তরুণ দলের পুজোর এবার ৭৩ তম বর্ষ। ওই পুজোতেও থাকছে জোড়া প্রতিমা। তালা, শেকল দিয়ে অভিনব ওই ধাতব প্রতিমা হচ্ছে। পাশেই থাকবে কুমোরটুলির শিল্পীর তৈরি প্রতিমা। ওই পুজো কমিটির সদস্য চৈতন্য ঘোষ বলেন, “প্রতিমায় অভিনবত্ব আনতেই ধাতব দুর্গার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রীতি মেনে পুজো করা হবে মৃন্ময়ী দুর্গাকে।” কোচবিহারের চালতাতলা এলাকার যুব সংঘের পুজোতেও থাকছে জোড়া প্রতিমা। সুর্বণ জয়ন্তী বর্ষের ওই পুজো কমিটির কর্তা সন্দীপ মিত্র জানিয়েছেন, বাঁশের কুলো, ঝুঁড়ি সহ নানা উপকরণে তৈরি মণ্ডপে সাবেক ঘরানার প্রতিমা নজর কাড়বে। পুজো করা হবে একটি আলাদা প্রতিমাকে। ২০১০ সালেও এখানে এমনই জোড়া দুর্গা ছিল।
কোচবিহার শহর লাগোয়া নেতাজি স্কোয়ার সঙ্ঘ ইউনিটে পুজোর এবার ৫৬ তম বর্ষ। চট, পাটকাঠি, ধানের তুষের গুড়ো দিয়ে প্রতিমা সেখানকার বিশেষ আকর্ষণ। প্রায় ১০ ফুট লম্বা, ১৭ ফুট চওড়া ওই প্রতিমা গড়ছেন দিনহাটার এক শিল্পী। প্লাইউড, থার্মোকলের কারুকাজে সাজান ‘অকাল বোধন’ থিমের মণ্ডপসজ্জায় মানানসই ওই অভিনব প্রতিমা। স্থায়ী মূল মন্দিরে পুজো হবে ডাকের সাজের প্রতিমার। ওই পুজো কমিটির কর্তা অমিত চক্রবর্তী বলেন, “জোড়া দুর্গাই আমাদের পুজোর মূল আকর্ষণ।” কমিটির সদস্য ময়ূখ সরকার আশাবাদী, শহরতলির এই পুজোতেও এবার জনতার ঢল নামবে।