ফ্লেক্সে রবি, বিনয়, উদয়নদের কটাক্ষ

কোথাও রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ছবি ফ্লেক্সে। তাতে লেখা রয়েছে, “কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসকে শেষ করার কারিগর”। কোথাও উদয়ন গুহের ছবি ফ্লেক্সে। সেখানে লেখা রয়েছে, আমি বাঘের বাচ্চা তৃণমূলে এসেছি দলকে ধ্বংস করতে। কোথাও আবার বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স। নীচে লেখা রয়েছে, “আমি দলদাস নই, আমি সাম্প্রদায়িক বর্মন দাস।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৮
Share:

তরজা: কোচবিহারে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নিয়ে এ ভাবেই নানারকম ফ্লেক্স দেখা যাচ্ছে। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

কোথাও রবীন্দ্রনাথ ঘোষের ছবি ফ্লেক্সে। তাতে লেখা রয়েছে, “কোচবিহার তৃণমূল কংগ্রেসকে শেষ করার কারিগর”। কোথাও উদয়ন গুহের ছবি ফ্লেক্সে। সেখানে লেখা রয়েছে, আমি বাঘের বাচ্চা তৃণমূলে এসেছি দলকে ধ্বংস করতে। কোথাও আবার বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স। নীচে লেখা রয়েছে, “আমি দলদাস নই, আমি সাম্প্রদায়িক বর্মন দাস।”

Advertisement

জেলা তৃণমূলের শীর্ষ এই তিন নেতাকে নিয়ে এমনই ফ্লেক্সে ছয়লাপ কোচবিহার। বিরোধীরা বলছেন, তৃণমূলের অন্তর্কলহে এ বারে ফ্লেক্স রাজনীতির সংয়োজন। ফ্লেক্স টাঙানোর পিছেন যে তাঁদের দলের নেতা-কর্মীরাই রয়েছেন, সে কথা অস্বীকার করছেন তৃণমূল নেতারাও।

আসলে কেন পড়ল ফ্লেক্স? কারাই বা এর পিছনে? ওই ঘটনার সূত্রপাত, কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। তৃণমূলেরই একটি অংশ দলের প্রবীণ নেতা আব্দুল জলিল আহমেদকে সভাধিপতি করতে চেয়েছিল। সেখানে দল সভাধিপতি করে উমাকান্ত বর্মণকে। এর পরেই আব্দুল জলিল আহমেদের অনুগামীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়েন। রাস্তা অবরোধ, টায়ার জ্বালানো থেকে জেলার দায়িত্বে থাকা নেতাদের গালি দেওয়া কোনওটাই বাদ যায়নি। এমনকি দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামেও গালি দেওয়া হয়। সভাধিপতি নির্বাচিত হওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে ফ্লেক্ল পড়া শুরু হয়। হরিশ পাল মোড় থেকে স্টেশন মোড় পর্যন্ত একাধিক এলাকায় ফ্লেক্স টাঙিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

ওই তিন নেতার অনুগামীদের অভিযোগ, ফ্লেক্স টাঙানোর ঘটনায় একটা চক্রান্ত কাজ করেছে। আগে থেকেই ওই বিষয়ে ছক সাজিয়ে রাখা হয়, কী হলে কী করা হবে। সে জন্যেই ফ্লেক্স আগে থেকেই তৈরি ছিল। জলিল আহমদের অনুগামীদের একটি অংশের সঙ্গে সেখানে দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরোধী গোষ্ঠীও এমন কাজ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ফ্লেক্স যারাই টাঙিয়ে থাকুন, নিচু মনের পরিচয় দিয়েছেন। এমন কেউ আর যাই করুক তৃণমূল করতে পারে না। কারা এর পিছনে রয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি।” উদয়নবাবু বলেন, “আমরা জানি না কারা এই কাজ করেছে। যেই করুক না কেন তারা যে দলের ভাল চান না তা পরিষ্কার। সমস্ত প্রমাণ আমরা পেয়ে যাব। তা নেতৃত্বকে জানানো হবে।”

আব্দুল জলিল আহমেদের অনুগামীদের একটি অংশ অভিযোগ করেন, জলিল আহমেদ যাতে সভাধিপতি হতে না পারেন, সেই চেষ্টা দলেরই একাংশ জেলা নেতা করেছেন। ওই অংশই নেতাদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখিয়েছে।

আব্দুল জলিল আহমেদ অবশ্য বলেন, “সাময়িক ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতেই পারে। কিন্তু এ ভাবে ফ্লেক্স টাঙিয়ে কাউকে হেনস্থা করার চেষ্টা অন্যায়। এটা যারাই করুক ঠিক করেনি।” তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “এখন দিল্লিতে রয়েছি। ঠিক কী হয়েছে জানি না। খোঁজ নেব।” বনমন্ত্রী বিনয়বাবু বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন