কমলেশ সাহা। নিজস্ব চিত্র
ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রবিবার ১৪ ঘণ্টা ঘরে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তাতে মাথায় হাত রায়গঞ্জের মোহনবাটী বাজারের আনাজ বিক্রেতা কমলেশ সাহার। তিনি বলছেন, ‘‘কাঁচামাল প্রতি দিন সব বিক্রি হয় না এমনিতেই। ছুটির দিনে বাজারে বিক্রি হয় অন্য দিনের তুলনায় বেশি। এক দিন দোকান বন্ধ থাকলে কয়েক হাজার টাকার আনাজ নষ্ট হতে পারে।’’
কমলেশের বাড়ি রায়গঞ্জ শহরের কাঞ্চনপল্লিতে। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি ওই বাজারে আনাজ বিক্রি করেন। পরিবারের একমাত্র রোজগেরে কমলেশ। স্ত্রী, এক ছেলে ও বাবাকে নিয়ে তাঁর সংসার।
কমলেশের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর কথায় রবিবার বাজারে লোক কম আসতে পারে। তাতে ব্যবসার ক্ষতি হবে।’’ তিনি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায় এক সপ্তাহ ধরে বাজারে ভিড় কম হচ্ছে। ব্যবসা ভাল চলছে না। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০ কিলোগ্রামের কমে আনাজ মেলে না। ক্রেতার অভাবে কয়েক দিন ধরে আনাজ পড়ে থাকছে। সে সব শুকিয়ে যাওয়ায় পরে ক্রেতারা তা কিনতেও চাইছেন না।
কমলেশের বক্তব্য, ‘‘দোকানের আয়ে সংসার চলে। প্রতি মাসে ছেলের পড়াশোনা ও পরিবারের লোকের চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়। করোনাভাইরাসের জেরে একেই ব্যবসা ভাল চলছে না। তার মধ্যে রবিবার দোকান বন্ধ রাখলে আরও ক্ষতি হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবে সবাইকে গৃহবন্দি করে ভাইরাস রোখা সম্ভব হবে কিনা জানা নেই। তবে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সচেতন হলে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচা সম্ভব বলে মনে হয়।’’
কমলেশের বক্তব্য, ‘জনতা কার্ফু’র ডাক দেওয়ার আগে ‘দিন আনা দিন খাওয়া’ ছোট ব্যবসায়ী, শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা ও ভ্যানচালক, ঠিকাশ্রমিক-সহ এ ধরণের কাজে জড়িতদের কথা ভাবা উচিত ছিল প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবসা ভাল হলে সারা দিনে ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়। এখনকার বাজারে ওই টাকাতেও সংসার চলে না। তার উপরে এক দিন দোকান বন্ধ থাকলে আমার মতো অনেকের পরিবারই সঙ্কটে পড়বে।’’